এ জেলার পর্যটন খাতের সম্ভাবনা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে উপস্থাপন না করাকে ভরা মৌসুমেও পর্যটক খরার মূল কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
আর মাত্র একদিন পরেই বিশ্ব পর্যটন দিবস।
পাহাড় ধসের পর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলেও এ বিষয়ে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটকদের জানান দেওয়া বা ভীতি কাটানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। প্রচার-প্রচারণা না থাকায় ‘রূপের রাণী’ রাঙামাটি এখন পর্যটক শূন্য। ভ্রমণ পিপাসুদের পদভারের আশায় উন্মুখ হয়ে আছে এখান মানুষজন।
পাহাড় ধসের ধাক্কা সামলে নিয়ে ইতোমধ্যে জেলার অন্যান্য অর্থনৈতিক খাত অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেলেও পর্যটন শিল্প ঝিমিয়ে থাকার পেছনে প্রচার-প্রচারণার অভাবকেই দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
হোটেল-মোটেল ব্যবসা, কাপ্তাই হ্রদে ইঞ্জিন চালিত নৌকার চালক এবং হস্তশিল্প বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছর সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই রাঙামাটিতে পর্যটকের স্রোত শুরু হয়। আর ঈদ, পূজা বা বিভিন্ন উৎসব ঘিরে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে তো কথাই নেই।
এ ধরনের লম্বা ছুটির সময় অনেক আগে থেকেই রাঙামাটির হোটেল মোটেলগুলো আগাম বুকড হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর সদ্য শেষ হওয়া কোরবানির ঈদের সময়টাতে তো কোনো পর্যটকই ছিল না। সামনে পূজার বন্ধেও পর্যটক আসার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলেও আশঙ্কা এ খাত সংশ্লিষ্টদের।
সবুজ বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন রাঙামাটি। এই রাঙামাটি-কে ঘিরেই আবর্তিত নয়নাভিরাম কাপ্তাই হ্রদ। আর হ্রদের সঙ্গে মিলে মিশে একাকার সবুজ পাহাড়। এসব সৌন্দর্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাঙামাটির সিম্বল খ্যাত ঝুলন্ত সেতু। তাই রাঙামাটির রাঙা রূপ দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসে হাজার হাজার পর্যটক। তারা ভাবের জগতে হারিয়ে যায় পাহাড় আর হ্রদের সৌন্দর্যের মাঝে।
কিন্তু লীলাময়ী প্রকৃতির এই অপরূপ শোভা দর্শনের এ জন্য জেলার সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ কোনোকালেই ছিলনা। এমনকি কি সমাগত পর্যটন দিবস ঘিরেও দায়সারা কিছু কর্মসূচির বৃত্তের বাইরে এবারও যেতে পারেনি পর্যটন দপ্তরের অভিভাবক রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ জেলায় পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল অন্তত ১৫ হাজার পরিবার যেমন আর্থিক সঙ্কটে পড়বে, তেমনি রাষ্ট্র হারাবে বড় অংকের রাজস্ব।
ব্যবসা মন্দা যাওয়ায় ইতোমধ্যেই পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী এবং কর্মচারীরা এবার বেকায়দায় রয়েছেন। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা পেশা বদল করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন। রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
এ বিষয়ে হোটেল প্রিন্স এর মালিক নেছার আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, পাহাড় ধস এবং সড়কপথ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আমাদের অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার চেষ্ঠা করছি সেই লোকসান থেকে বের হতে।
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বাংলানিউজকে জানান, সামনে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালন করা হবে। এ দিবসকে ঘিরে আমাদের হোটেল-মোটেলগুলোতে ২০% ছাড় দেওয়া হয়েছে। দুর্গা পূজার ছুটিতে হোটেল-মোটেলগুলো মোটামুটি বুকিং রয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এসএইচ