শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই পর্যটকের মিছিলের হাওয়া লেগেছে এ সমুদ্র জনপদে। শহরের পর্যটন জোনে হোটেল-মোটেল এরইমধ্যে লাখো পর্যটক অবস্থান নিয়েছেন।
আর মাত্র দু’দিন পর শুরু হবে নতুন বছরের পথচলা। ৩৬৫ দিনের সফলতা-ব্যর্থতা পেছনে ফেলে সুন্দর আগামীর আহ্বানে রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে পালন করা হবে থার্টিফার্স্ট নাইট বা বর্ষবরণ উৎসব। এ উৎসবকে উপলক্ষ করে পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার ওই সময়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠবে। বিগত এক দশক ধরে এমন চিত্রই দেখছেন স্থানীয়রা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরনো বছরকে বিদায় জানাতে পাঁচ লাখ পর্যটকের সমাবেশ ঘটবে। এরইমধ্যে শহরের হোটেলের প্রায় ৯০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। কক্সবাজারে এবার শীত মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকের ঢল নামে। হোটেল-মোটেলগুলোতে এখন ঠাঁই নেই অবস্থা। আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিও অনেক হোটেল-মোটেলের আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
কক্সবাজারের তারকা হোটেল কক্স টুডের ম্যানেজার শাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পর্যটক ঢল। আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের হোটেলে কোনো রুম খালি নেই।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার জানান, কক্সবাজারে ছোট-বড় সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে দৈনিক প্রায় তিন লাখ লোকের থাকার ব্যবস্থা আছে। এসবের বাইরেও দুই লাখ মানুষ অ্যাপার্টমেন্টসহ বিভিন্নভাবে কক্সবাজারে অবস্থান করেন।
পুলিশ সুপার সূত্র জানায়, এবারের থার্টিফার্স্ট উপলক্ষে খোলা আকাশের নিচে কোনো আয়োজনের অনুমতি নেই। শুধু ইনডোরে প্রোগামের অনুমতি রয়েছে। সমুদ্র শহরের তারকা মানের হোটেল সাইমন এবং ওশান প্যারাডাইস ইনডোর প্রোগামের অনুমতি নিয়েছে। তারপরও সমুদ্র জনপথে নামবে পর্যটক ঢল।
রবি লাইফগার্ডের ইনচার্জ সৈয়দ নুর বলেন, কলাতলী, সুগন্ধা, লাবনী বিচে পর্যাপ্ত সংখ্যক লাইফ গার্ডের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দুর্ঘটনা, উদ্ধার তৎপরতায় যেন সমস্যা না হয় সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, সমুদ্রে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানে ট্যুরিস্ট পুলিশ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাতে কলাতলী রোডে মোটরসাইকেল, বিচে পর্যটক বেশে ঘোরাফেরার পাশাপাশি পোশাকধারী পুলিশও থাকবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, বিচের নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্টরা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। ইভটিজিং, পর্যটকের হারানোর জিনিসপত্র খোঁজার জন্য কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি পর্যটকরা কোনো ধরনের সমস্যায় পড়বেন না।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল বলেন, এবারের থার্টিফার্স্ট উদযাপনে কক্সবাজারে প্রায় পাঁচ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটবে। তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে জেলা পুলিশ এরইমধ্যে শহরকে ছিনতাইমুক্ত করতে কাজ করছে। এছাড়া পর্যটন জোনে বাড়ানো হয়েছে সাদা পোশাকে পুলিশের সংখ্যা। লিংকরোড থেকে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৬টি তল্লাশি চৌকি বসানো হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, পর্যটক বরণে মোবাইল টিম, অ্যাম্বুলেন্স, সাদা পোশাকে পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবাই প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
টিটি/জেডএস