তাবাক্ষ শব্দটি স্থানীয় ত্রিপুরা ভাষা। ‘তাবাক’ অর্থ বাদুড় এবং ‘খ’ অর্থ গুহা।
খাগড়াছড়ি-দীঘিনালার সীমান্তবর্তী আটমাইল এলাকা থেকে যেতে হবে এই গুহায়। মূলসড়ক থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার ইটের রাস্তা যাওয়া যাবে গাড়িতে। নলখাগড়া বনে ঘেরা আঁকা-বাঁকা, উচুঁ-নিচু গুহাটিতে যাওয়ার রাস্তা। ইটের রাস্তা শেষ করলেই শুরু হবে দুই কিলোমিটারের পায়ে হাঁটাপথ। পাহাড়ের ভেতরের পথ ধরে হাঁটতে হবে প্রায় ২০মিনিট। এই ২০ মিনিটে কখন পাহাড় বেয়ে নামতে হবে। কখনো আবার হিম শীতল পানির পথ ধরে দিয়ে হাঁটতে হবে। গুহার ঠিক আগে শেষ যে পাহাড়টি বেয়ে নামতে হবে। সেটি মূলত একটি ঝরনার পাশ দিয়ে শক্ত কোনো লতা ধার। গুহায় শুষ্ক মৌসুমে পানি না থাকলেও ভরা বর্ষায় পাওয়া যাবে তার বুনো রূপ। তখন তার গা ঘেঁষে নামা নিশ্চিত দারুণ এক অনুভূতি পাওয়া যাবে।
তারপর মাইরুং তৈসা ছড়া দিয়ে ৫/৭মিনিট এগোলেই পৌঁছে যাবেন ‘তাবাক খ’ গুহার মুখে। গুহার সামনের অংশে কিছুটা আলো মিললেও বাকি পুরো অংশ ঘুটঘুটে অন্ধকার। ১শ ৬০ ফিটেরও বেশি দৈর্ঘ্য এবং প্রায় সাড়ে তিন ফিট প্রশস্থ গুহাটি। শেষ অংশের মাঝখানে পাথর না থাকলে আরও যাওয়া যেতো। গুহাটিতে যাওয়ার পর, তা দেখে ধারণা হতে পারে এটি মানুষের তৈরি। দীঘিনালার সাংবাদিক জাকির হোসেন ও পলাশ বড়ুয়া বলেন, ‘তাবাক খ’ গুহাটি সম্পর্কে শুধুমাত্র স্থানীয়রা জানতো। বাইরের কেউ জানতো না বলে তেমন কেউ আসতো না। গুহাটিতে প্রবেশের ঠিক একটু সামনে প্রাকৃতিকভাবে পানি জমাট থাকে। চাইলে সেখানে গোসলও করা যাবে।
জাহাঙ্গীর আলম রাজু ও পার্থ দেওয়ান বলেন, এতদিন পর্যটকরা খাগড়াছড়িতে আলুটিলা গুহা সম্পর্কে জানতো। এখন ‘তাবাক খ’ গুহা বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। এ গুহা আলুটিলা গুহার চেয়ে বেশি অ্যাডভেঞ্চার ও রোমাঞ্চকর। তবে, যাতায়াতারে সুবিধার্থে মূলসড়ক থেকে আট কিলোমিটার ইটের রাস্তার ভাঙা অংশ সংস্কারের কথা বলেন। স্থানীয় রথী চন্দ্র কার্বারীপাড়ার প্রধান (কার্বারী) গুণধর ত্রিপুরা বলেন, সবাই জানতো খাগড়াছড়িতে শুধু আলুটিলা গুহা নামে একটি গুহা আছে। তবে এখন নতুন ‘তাবাক খ’ গুহাটি নতুন স্পট হিসেবে যুক্ত হলো। মূলসড়ক থেকে গুহায় ঘুরতে আসা পুরো যাত্রাপথ পর্যটকদের ভালো লাগবে বলে আশাবাদী তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
এএটি