ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

সাজেক পানে ছুটছেন পর্যটকরা

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
সাজেক পানে ছুটছেন পর্যটকরা সাজেক পানে ছুটছেন পর্যটকরা। ছবি: বাংলানিউজ

খাগড়াছড়ি: সকাল হতেই খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরসহ আশপাশের এলাকায় লোকে লোকারণ্য। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহি বাসগুলো থামছে সেখানে।

গাড়ি থেকে দলে দলে নামছে পর্যটক। একটু জিরিয়ে ফের রওনা হচ্ছে সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সাজেকের পথে।
 
সচরাচর শুক্র ও শনিবার সাজেকে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকতো। কিন্তু এখন পুরো সপ্তাহজুড়েই থাকে ভিড়। করোনা মহামারির মধ্যে বছরের শেষে এসে বেড়েছে পর্যটকের চাপ।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত সাজেক। আয়তনের দিক থেকে যেটি দেশের বৃহত্তম ইউনিয়ন। রাঙ্গামাটির উত্তরে ভারতের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত সাজেক মূলত তিনটি পাড়া নিয়ে গঠিত। রুইলুই পাড়া, হামারি পাড়া, কংলাক পাড়া। পযর্টকরা মূলত রুইলুই এবং কংলাক পাড়ায় গিয়ে থাকেন। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে যার উচ্চতা প্রায় সাড়ে ১৭শ ফুট।
 
রাঙ্গামাটি জেলায় অন্তর্ভুক্ত হলেও সাজেকে যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। জেলা শহর থেকে পিচ ঢালা আঁকা বাঁকা পথ দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে ছোট বড় হাজারো পাহাড়ে বেষ্টিত প্রকৃতির নিজস্ব সৌন্দর্যের।

এখানে মূলত মেঘ-পাহাড়ের দারুন মিতালি মুগ্ধ করে পর্যটকদের। যতদূর চোখ যায় শুধু পাহাড়ের উপর শুভ্র মেঘের আনাগোনা। সাজেকে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের রূপ দুটোই মুগ্ধ করে পর্যটকদের। এছাড়াও শীত, বর্ষা বা গরম সব পরিবেশে আপন রং ছড়ায় সাজেক। রোদ ঝলমলে সাজেকে হানা দেয় হঠাৎ বৃষ্টি। অনেক সময় আবার মুহূর্তে ঢেকে যায় মেঘের চাদরে।

রুইলুই পাড়া থেকে কিছুটা দূরে কংলাক পাহাড়ের অবস্থান। এটি সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া। এই যাত্রায় দূরের মিজোরাম আরও পরিষ্কার দেখা যায়। এখানে দাঁড়িয়ে দেখা যাবে নিচের পাহাড়গুলো নিয়ে খেলছে সাদা মেঘ। এছাড়াও সাজেকে বসবাসকারী পাহাড়িদের জীবন-সংস্কৃতি সম্পর্কে দেখার সুযোগ তো থাকছেই।
 
মেঘের এই উপত্যকা ঘিরে দিনে দিনে বাড়ছে পর্যটকদের আগ্রহ। তাই সুযোগ পেলে সেখানে ছুটতে চাইছে সবাই। তবে এই চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় রিসোর্ট-কটেজ মালিকরা। সাজেকে ছোট বড় মিলে প্রায় ১০০টির মতো কটেজ-রিসোর্ট রয়েছে। যার ধারণ ক্ষমতা দুই থেকে আড়াই হাজার পর্যটকের। তবে অধিকাংশ সময় পর্যটকদের চাপ বেশি থাকে। এই কারণে রুমের ভাড়াও গুনতে হয় দ্বিগুণ।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আফতাব মাহমুদ ও শাকিল আহম্মেদ জানান, অনেক দিন ধরে সাজেক আসার ইচ্ছে ছিল। এবার তা পূরণ হলো। অসাধারণ লাগছে। বিশেষ করে সকাল বেলার সূর্যদোয় দেখাটা ছিল স্পেশাল। যাত্রাপথটাও দারুণ।

রয়েল সাজেক রিসোর্টের পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, সারাদেশের মানুষের এখন মূল আকর্ষণ সাজেক। তাই চাপটা একটু বেশি। সিজনে একটু ভাড়া বেশি থাকে এটি সত্য। তবে এতদূরে রিসোর্ট পরিচালনায় আমাদের খরচটাও অনেক বেশি হয়।

সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জুমঘর ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী জেরি লুসাই বলেন, অনেকে অগ্রিম রুম বুকিং দিয়ে বেশি দামে পর্যটকদের কাছে ভাড়া দিয়ে থাকতো। এমন বহু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। জানুয়ারি থেকে আমরা রিসোর্টের রুম ভাড়া নির্ধারণ করে দেবো। এতে পর্যটকদের ভোগান্তি কমবে।
 
রুইলুই মৌজার হেডম্যান লাল থাংগা লুসাই বলেন, করোনার মধ্যে পর্যটন স্পটের উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকে সাজেকে পর্যটকদের ভিড় বেশি। বছরের শেষ এবং শুরুর দিকে চাপটা বেশি থাকবে। আমাদের সাজেকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
এডি/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।