ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২১
পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার দাবি ছবি: শাকিল

ঢাকা: বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা ও ট্যুর অপারেটরদের বাঁচানোর লক্ষ্যে পর্যটন কেন্দ্রগুলো স্বাস্থ্যবিধি ও এসওপি মেনে খুলে দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন টোয়াবের পরিচালক মোহাম্মদ সাহেদ উল্লাহ। তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম পর্যটন খাত। করোনার প্রভাবে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প। করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর দেশের পর্যটন শিল্প অভ্যন্তরীণ পর্যটনের মাধ্যমে কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টায় ছিল কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে পর্যটন আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

সাহেদ উল্লাহ বলেন, গত বছর করোনার কারণে পর্যটনের সঙ্গে জড়িতদের সবার ক্ষতির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। শুধু টোয়াব সদস্যদের ক্ষতি হয়েছে পাঁচ হাজার সাতশ’ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ থেকে সবকিছু স্থবির হওয়ায় পর্যটন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ে। চলমান পরিস্থিতি আগামী ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত বর্ধিত হলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় নয় হাজার কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডির মেম্বার মো. রাফেউজ্জামান বলেন, পর্যটন এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। ২০১৯ সালের জিডিপিতে পর্যটন চার দশমিক চার শতাংশ যোগ করেছিল। মহামারির কারণে পর্যটন খাতকে গত বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয়েছে। এ শিল্পে জড়িত প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকেই হতাশ হয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। আমারা টোয়ারেব পক্ষ থেকে গত বছর করোনা ভাইরাস মাহমারির শুরু থেকেই ট্যুর অপারেটর ও পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে আসছি, যা আজও সফলতার মুখ দেখেনি। এমনকি সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কোনো প্রকার ব্যাংক লোন গ্রহণ করতে পারেনি। এবারের প্রস্তাবিত বাজটে এ খাতে চার হাজার বত্রিশ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা আগের বাজেটের চেয়ে ৩৪৪ কোটি টাকা বেশি। আমি মনে করি এ বরাদ্দ বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য খুবই যৎসামান্য। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের কথা বলেছেন কিন্তু খাতটিকে আর্থিক সংকট থেকে বের করে আনার বিষয়ে কোনো প্রকার দিকনিদের্শনা খুঁজে পায়নি।

টোয়াবের দাবিগুলো- বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে করোনা ভাইরাসের প্রভাবের থেকে দ্রুত উত্তরণে ও দেশের পর্যটন শিল্পকে ধ্বংসের হাত রক্ষার জন্য পর্যটন স্পটগুলো স্বাস্থবিধি মেনে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে দ্রুত খুলে দেয়া। টোয়াবেরের পক্ষ থেকে ট্যুর অপারেটরদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। টোয়াব সদস্যদের জন্য পরবর্তী বছরের ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়াল ফি মওকুফ করা। টোয়াব সদস্যদের ও তাদের পরিবার এবং টোয়াবের সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের করোনার টিকা গ্রহণ করতে দিতে হবে। দেশের পর্যটন শিল্পের যথাযথ উন্নয়ন ও বিকাশে পর্যটনের জন্য সরকারের কাছে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ের দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- টোয়াবের পরিচালক, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়া তুষার, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের (টোয়াস) সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম জমাদ্দার, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২১
এমএমআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।