চাঁদপুর: করোনার কারণে গত দুই বছর চাঁদপুরের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র তিন নদীর মোহনা বড় স্টেশন মোলহেড বন্ধ থাকলেও এবার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলার দর্শনার্থীদের পদাচরণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রটি।
শিশু, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন স্বল্প সময়ের বিনোদনের জন্য এখানে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। বিশেষ করে পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলন স্থলে পানির বিচিত্র রঙ ও ঢেউ দেখে লোকজন মুগ্ধ হয়। এ স্থানটির নতুন করে নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু পর্যটন পার্ক’। তবে এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি।
বুধবার (৪ মে) বিকেলে মোলহেডে গিয়ে দেখা গেছে, মিনি ট্রাকে করে তরুণরা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস করে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ঘুরতে এসেছেন। দর্শনার্থীদের মধ্যে অনেকেই মোলহেডের গাছের নিচে বসে তিন নদীর মিলন স্থলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।
পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করলেই দেখা যায়, প্রতীকী ইলিশের ভাস্কর্য (ইলিশ সেলফি স্ট্যান্ড)। দর্শনার্থীরা এখানে ছবি তোলার জন্য ভিড় করছেন। এর পাশেই আছে নাগরদোলাসহ শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলার জিনিসপত্র এবং ঘোড়া। মোলহেডের মাঝখানে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘রক্তধারা’।
এছাড়াও দর্শনার্থীরা বিনোদনের জন্য ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীতে ট্রলার ও প্রিড বোর্ড ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া করে ঘুরে বেড়ান। তবে নদীতে ট্রলারে ওঠার জন্য লাইফ জ্যাকেট পড়ার নির্দেশনা আছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ ছাড়াও সময় পেলেই এখানে ঘুরতে আসি। কারণ এখানকার পরিবেশটা খুবই মনোমুগ্ধকর।
হাজীগঞ্জ থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বছরের অন্য সময় ঘুরার সময় হয় না। যার কারণে ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে এখানে ঘুরতে আসি। এখানে এলে সময়টাও ভালো কাটে।
বাংলাদেশ অভিনয় শিল্পী সংঘের সদস্য ও চাঁদপুর বর্ণচোরা নাট্য শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদপুরে মোলহেড ছাড়া আর কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় সব লোকজন এখানে ছুটে আসে। আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সব লোকজনের একটাই দাবি চাঁদপুরে একটি বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হউক।
বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন লিটন বাংলানিউজকে বলেন, বিকল্প বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় অল্প জায়গায় হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। শুধুমাত্র চাঁদপুরের লোকজনই নয়, বিভিন্ন জেলার মানুষ এখানে আসেন। আবার মোলহেডে ভিড় থাকার কারণে চাঁদপুরের লোকজন অন্য জেলায় ভ্রমণ করতে যান। আমাদের চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে হলেও বড় ধরনের একটি বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা এখন সময়ের দাবি।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বড় স্টেশন মোলহেডে দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমাদের নজরদারিও রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২২
এসআরএস