ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ, ষাটগম্বুজ মসজিদে দর্শনার্থীদের ভিড়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ, ষাটগম্বুজ মসজিদে দর্শনার্থীদের ভিড়

বাগেরহাট: সুন্দরবন বন্ধ থাকায় বাগেরহাটের আরেক বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদে ভিড় জমিয়েছেন দর্শনার্থীরা। মঙ্গলবার (১২ জুলাই) ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গনে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।

রোববার (১০ জুলাই) ঈদের দিন বিকেল থেকেই ষাটগম্বুজে দর্শনার্থীদের উল্লেখযোগ্য ভিড় ছিল।

শুধু ষাটগম্বুজ মসজিদ নয়, খানজাহান আলী (রহ.) মাজার, বাগেরহাটের চন্দ্রমহল, সুন্দরবন রিসোর্ট, পৌর পার্কসহ মুনিগঞ্জ ও দড়াটানা সেতুতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসব স্থানে ঘুরতে আসেন দর্শনার্থীরা। বিনোদন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দ উপভোগ করছেন শিশুরা।

সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাটকে বেছে নিয়েছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। গত তিন দিনে লক্ষাধিক মানুষ বাগেরহাট ভ্রমণ করেছেন বলে ধারণা করছেন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সপ্তাহজুড়ে জেলার ঐতিহাসিক ও দর্শণীয় এসব স্থানে পর্যটকদের ভিড় থাকবে বলে জানিয়েছে বাগেরহাট প্রত্মতত্ব বিভাগ।

পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে ষাটগম্বুজ মসজিদ ঘুরতে আসা লিলি মাহবুব বলেন, বই-পুস্তকে পড়েছি বাগেরহাট হলো মসজিদের শহর। এত বছরের প্রাচীন সব মসজিদ দেশের কোথাও দেখা যায় না। দীর্ঘদিন ধরে ইচ্ছে ছিল বাগেরহাট আসার। কিন্তু সময় করতে পারিনি। অনেক চেষ্টা করে এবার সবাই মিলে আসলাম, খুব ভাল লাগছে।

ঢাকা থেকে ষাটগম্বুজ মসজিদে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা মমো চৌধুরী বলেন, অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট বেড়াতে আসার। কিন্তু সময়ের অভাবে আসা হয়নি। তাই এ বছর ঈদের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলে আসলাম। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর এখন যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক ভালো। ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখলাম, খানজাহান (রহ.) এর মাজার দেখলাম। আমার অনেক ভালো লেগেছে। এক কথায় বলতে গেলে বাগেরহাটের সব কিছু আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। আমাদের দেশে দেখার মতো যে অনেক কিছু আছে, এখানে না আসলে বুঝতাম না। এছাড়া ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গনে শিশুদের জন্য নানা ধরনের রাইডের ব্যবস্থা আছে। আমার ছেলে-মেয়েরাও জায়গাটা খুব পছন্দ করেছে। সময় পেলে আবারও আসার ইচ্ছা আছে।

রহিম উদ্দিন নামে আকের দর্শনার্থী বলেন, ঈদের ছুটিতে নাতি-নাতনিসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসলাম। ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ হলো হযরত খানজাহানের একটি অন্যন্যো সৃষ্টি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মসহ সবার এ মসজিদটি দেখতে আসা উচিত বলে আমি মনে করি।

ঢাকার মিরপুর থেকে ষাটগম্বুজে আসা তামান্না বলেন, ইচ্ছে থাকলেও ফেরির বিড়ম্বনার ভয়ে বাগেরহাটে আসিনি। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসলাম। ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখলাম, খানজাহানের মাজার দেখলাম। আমার অনেক ভালো লেগেছে।

মৌসুমী দেবনাথ নামে এক নারী বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- আমি এই নীতিতে বিশ্বাস করি। আমারশ্বশুর বাড়ি বাগেরহাটে। আমি ও আমার স্বামী কাজের সুবাদে ঢাকায় থাকি। বিয়ের পর এ বছরই বাগেরহাটে ঘুরতে আসলাম। আমার অনেক ভালো লেগেছে।

হেলপজোন টুরস অ্যান্ড ট্যাভেলসের সমন্বয়ক শেখ সায়মন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ষাটগম্বুজসহ বাগেরহাটের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ব্যাপক দর্শনার্থী এসেছে। আমাদের ধারণা ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান (রহ.) এর মাজার, চন্দ্রমহল, কোদলা মঠ, চুনখোলা মসজিদসহ বাগেরহাটের অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে লক্ষাধিক দর্শনার্থী এসেছে গত তিন-চার দিনে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবং সুন্দরবন বন্ধ থাকায় দর্শনার্থীর পরিমাণ বেড়েছে বলে দাবি করেন সায়মন।

প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ বলেন, ঈদের ছুটিতে গত তিনদিন ষাটগম্বুজ মসজিদসহ জেলার ঐতিহাসিক সব স্থাপনায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। ঘুরতে আসা এসব পর্যটকদের জন্য ২০ জন আনসার সদস্য ও ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সপ্তাহজুড়ে জেলার ঐতিহাসিক ও দর্শণীয় এসব স্থানে পর্যটকদের ভিড় থাকবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ঈদের ছুটিতে অন্তত অর্ধলক্ষ দর্শনার্থী ষাটগম্বুজ ভ্রমণ করবেন বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ  সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।