চিরায়ত বাংলার নয়নাভিরাম নকশাখচিত শতরঞ্জি এক সময় সমাজের বিত্তবানদের বসতবাড়িতে, বাংলো বা অতিথিশালায় ভোজনের বিশেষ আসন হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
তবে বর্তমানে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে শতরঞ্জির বহুবিধ ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বাণিজ্যমেলার এসএমই ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে ‘রংপুর ক্রাফ্ট’ (১২ নম্বর স্টল) ও ‘শতরঞ্জি পল্লী’ (২২ নম্বর স্টল) নামের দু’টি স্টলে বিভিন্ন ডিজাইনের শতরঞ্জির পসরা বসানো হয়েছে। আর এই স্টল দু’টি ঘিরে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়।
স্টল দু’টিতে বিভিন্ন রঙের ৩০-৩৫টি ডিজাইনের শতরঞ্জির ওয়ালম্যাট, টেবিলম্যাট, কুশন কভার, সোফার রুমাল, জায়নামাজ, পাপোশ, হাত ব্যাগ, গ্লাসম্যাট, সোফার কাভার, মোবাইল ব্যাগ, মানি ব্যাগসহ ৩৩টি আইটেমের পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন ডিজাইনের নকশিকাঁথাও দেখা গেছে এই স্টলে।
এসব পণ্যে বাঙালির বিভিন্ন ঐতিহ্য, ফল, ফুল, কার্টুনসহ বিভিন্ন নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রং বেরংয়ের সুঁতোয়।
এসব শতরঞ্জির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে স্কয়ার ফিট হিসাবে। প্রতি স্কয়ার ফিট ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে নকশার সঙ্গে সঙ্গে দামেরও তারতম্য হচ্ছে।
স্টল দু’টিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ডিজাইন অনুযায়ী প্রতিটি ফ্লোরম্যাটের মূল্য ধরা হচ্ছে ১৬৫ থেকে ৪ হাজার ৮শ’ টাকা, টেবিলম্যাট ২ হাজার ২শ’ থেকে ৪ হাজার ৮শ’ ৫০ টাকা, হাত ব্যাগ ১ শ’ ৫০ থেকে ৫শ’ টাকা, গ্লাসম্যাট ৪০ থেকে ৬৫ টাকা, সোফা কাভার ৪ শ’ ২০ থেকে ৪ শ’ ৫০ টাকা, মোবাইল ব্যাগ ১শ ৫০ থেকে ৩ শ’ ৫০ টাকা এবং প্রতিটি নকশিকাঁথা বিক্রি করা হচ্ছে ২ হাজার ২শ’ থেকে ৪ হাজার ৮শ’ ৫০ টাকা।
রংপুর ক্রাফ্টে শতরঞ্জি কিনতে আসা হাসান আদনান বাংলানিউজকে বলেন, বিদেশি কার্পেটের তুলনায় আমাদের শতরঞ্জির ডিজাইন অনেক ভালো। তাছাড়া দামেও কম। অনেক সময় বিদেশি কার্পেট ওয়াস করা অসম্ভব, কিন্তু শতরঞ্জির এমন কোনো সমস্যা নেই। এজন্য আমরা শতরঞ্জিকেই বেছে নেই।
রংপুর ক্রাফ্টের পরিচালক নয়ন মনি সরকার বাংলানিউজকে বলেন, শতরঞ্জি রংপুরের ঐতিহ্য। ঢাকাতে এর অনেক চাহিদা। তাছাড়া ঢাকার বায়াররা বিদেশেও রফতানি করে। মেলার প্রথম দিন থেকেই আমাদের স্টলে ভালোই সাড়া পাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৮
এসআইজে/আরআর