বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অভিযোগ এসেছে ক্রেতা-দর্শনার্থী এবং বিক্রেতাদের কাছ থেকে। মেলার শেষ দিকে বিক্রেতাদের অভিযোগ ছিল, এবার ভোটের কারণে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে মোট ৪৫টি অভিযোগ আসে ভোক্তাদের কাছ থেকে। এর মধ্যে ৩৭টি অভিযোগে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সমঝোতা হলেও ৮টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন কারণে মোট ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাছাড়া ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উদ্যোগে দাম বেশি নেওয়া, পণ্যের নিম্নমান আর মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির অভিযোগে মোট ৩০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে মোট এক লাখ তিন হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এদিকে মেলার সময় বাড়ানো প্রসঙ্গে ছোঁয়া কালেকশনের পরিচালক মো. দিদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মেলায় প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছি, আমাদের মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমাদের প্রতিটি পণ্যের দাম কম। পণ্যগুলো মানসম্মত, টেকসই হলেও বিক্রেতা কম ছিল। তাছাড়া ভোটের কারণে দু’দিন বন্ধ, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণ গননার ঘড়ি স্থাপনের জন্য একদিন বন্ধ থাকায় আমরা অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। সময় বাড়ানো দরকার ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, এতে কিছুটা হলেও লাভ হয়েছে।
মেলায় শুরু থেকেই হকাররা প্রবেশ করতে থাকেন। শেষদিকে হকারের আধিপত্য বিস্তার লক্ষ করা যায়। স্টল-প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন পাশে তারা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করতে থাকেন বেশ দাপটের সঙ্গে। তবে হকার ও ভিক্ষুকের এমন আচরণে ক্ষুদ্ধ বেশিরভাগ ক্রেতা-দর্শনার্থী। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বলেন, আন্তর্জাতিক মেলায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের সুযোগ থাকে। মেলার সঙ্গে দেশের সম্মান জড়িত। বিদেশি অনেক দর্শনার্থী প্রতিদিন আসছেন এখানে। এ অবস্থার হকার-ভিক্ষুকের উপস্থিতি সম্মানজনক নয়।
মেলায় আগত সাহেলি সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, বাণিজ্যমেলাকে হকার ও ভিক্ষুকমুক্ত করা হোক। এটি আন্তর্জাতিক মেলা, এখানে দেশের মানসম্মান জড়িত। বিদেশি দর্শনার্থীরা এসব দেখলে ভালোভাবে নেবেন না। সাহেলির মতো একই কথা বললেন আরও একাধিক ক্রেতা-দর্শনার্থী।
অন্যদিকে মেলা বাস্তবায়ন কমিটি দর্শনার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে হকার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। তবে তাদের এ অভিযান হকারের সংখ্যা বিবেচনায় একেবারেই সামান্য।
এ বিষয়ে মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সচিব আব্দুর রউফ বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করেছি। দর্শনার্থী সেজে হয়তো অনেক হকার মেলায় প্রবেশ করেছেন। মনে রাখতে হবে এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এটি দেশি-বিদেশি ক্রেতা-দর্শনার্থীর মিলনমেলা। আমরা কঠোর ছিলাম, আগামীতে আরও কঠোর হবো।
এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৯০টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল ছিল। মেলায় প্রবেশের জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের মূল্য ছিল ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের মূল্য ছিল ২০ টাকা। বাণিজ্যমেলায় ১৩টি ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ৩৮ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০
ইএআর/এফএম