পাঁচ আসামির মধ্যে নেসার আলী ও ওজায়ের আহমেদের ফাঁসি এবং শামছুল হোসেন তরফদার, মোবারক মিয়া ও ইউনুস আহমেদকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ইউনুস আহমেদ ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন, বাকিরা পলাতক।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।
এর আগে মঙ্গলবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন। ২০ নভেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, এই ৫ আসামির বিরুদ্ধে আনা পাঁচ অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে সাজা কার্যকর করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা দানু মিয়াকে হত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রথম অভিযোগে সবাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড, ডা. যামিনী মোহনকে অপহরণ করে হত্যাসহ দ্বিতীয় অভিযোগে নেসার, ইউনুস ও ওজায়েরকে আমৃত্যু কারাদণ্ড, নির্যাতন ও বাড়ি লুটপাটের তৃতীয় অভিযোগে ইউনুসকে খালাস দিয়ে নেসার ও ওজায়েরকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড, দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করে হত্যার চতুর্থ অভিযোগে সামছুল, নেসার, ইউনুস, ওজায়ের ও মোবারককে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট এবং গণহত্যার অভিযোগে নেসার ও ওজায়েরকে ফাঁসি বাকি তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, রেজিয়া সুলতানা সমন ও আবুল কালাম আজাদ। আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এম এইচ তামিম ও মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
পরে সুলতান মাহমুদ সীমন বলেন, এ রায়ে প্রসিকিউশন সন্তুষ্ট। বিস্তারিত রায় পাওয়ার পরে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে যাদের সর্বোচ্চ সাজা হয়নি তাদের বিষয়ে আপিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, আসামিপক্ষ সংক্ষুব্ধ। এখন রায় পাওয়ার পরে আপিল করা হবে।
২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করেন।
২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে সেদিন বিকেলেই রাজনগর উপজেলার গয়াসপুর গ্রামের ওজায়ের আহমেদ চৌধুরীকে মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনা থেকে ও সোনাটিকি গ্রামের মৌলভী ইউনুছ আহমদকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর এ তদন্ত শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮/আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা
ইএস/এসএইচ/এমজেএফ
** ‘বৃদ্ধ বয়স কখনো দণ্ড কমানোর কারণ হতে পারে না’
** এ রায়ে মৌলভীবাজারবাসীর কলঙ্ক মোচন হয়েছে