ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাইব্যুনাল

সাবেক শিবির নেতা ‘টিপু রাজাকার’র বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
সাবেক শিবির নেতা ‘টিপু রাজাকার’র বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক শিবির নেতা রাজশাহীর বোয়ালিয়ার মো. আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু রাজাকার ওরফে টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
 

প্রতিবেদন চূড়ান্তের পর মঙ্গলবার  (২৭ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান, জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক ও মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন।

এটি তদন্ত সংস্থার ৬১তম তদন্ত প্রতিবেদন।
 
আব্দুল হান্নান খান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় ১০ জনকে হত্যা, দুইজনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩টি বাড়ির মালামাল লুট করে আগুন দেওয়ার অপরাধ উঠে এসেছে তদন্তে। এসব অপরাধে এ আসামির বিরুদ্ধে দুইটি অভিযোগ আনা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। ’
 
এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে উল্লেখ করে আব্দুল হান্নান খান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি আর্মি ও স্থানীয় রাজাকাররা। স্থানীয় সেই সব রাজাকারদের মধ্যে টিপু সুলতানই বেঁচে আছেন। তাকে আমরা গ্রেফতার করেছি। ’
 
‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি জামায়াতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্র সংঘ’ পরবর্তীতে ‘ইসলামী ছাত্র শিবির’র সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৮৪ সালের পর থেকে রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। ’ 
 
তিনি বলেন, ‘আসামি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৪ সালে নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডিগ্রি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০১১ সালে অবসরে যান। ’
 
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ১৯৮৪ সালের পর সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলেও আসামি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক। ১৯৭৪ সালের ১০ আগস্ট তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে তিনি ছাড়া পান। গত বছরের ১ জানুয়ারি বিস্ফোরক আইনের মামলায় মতিহার থানার পুলশ তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
 
আসামির বিরুদ্ধে যে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো হলো- ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টা থেকে পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত আসামি মো. আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতান ওরফে টিপু রাজাকার স্থানীয় অন্যান্য রাজাকার ও পাক সেনারা বোয়ালিয়া থানার সাহেব বাজারের এক নম্বর গদিতে (বর্তমানে জিরো পয়েন্ট) হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বাবর মণ্ডলকে আটক করে। পরে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত সেনা ক্যাম্পে নিয়ে দিনভর নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে মরদেহ মাটিচাপা দেয়।
 
১৯৭১ সালের ২ নভেম্বর রাত আনুমানিক ২টায় এ আসামী, স্থানীয় রাজাকার ও ৪০ থেকে ৫০ পাক সেনা বোয়ালিয়া থানার তালাইমারী এলাকায় হামলা চালায়।
 
এ হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদ মিয়া, আজহার আলী শেখসহ ১১ জনকে আটক করে নির্যাতন চালায়। এসময় তারা তালাইমারী এলাকার ১২ থেকে ১৩টি বাড়ি লুট করে।
 
পরে আটক ১১ জনকে রাবির শহীদ শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত অস্থায়ী ক্যাম্প ও টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে ৪ নভেম্বর মাঝরাতে ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
ইএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ট্রাইব্যুনাল এর সর্বশেষ