সোমবার (০১ জুলাই) পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এ জেলহাজতে থাকা বিএনপির ৩০ নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি তুলে ধরেন। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক রোস্তম আলী এ আদেশ দেন।
চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু ও অন্যতম আসামি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল আদালতে হাজির ছিলেন না। তাদের বিরদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী গোলাম হাসনায়েন, অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান মুক্তা, ওবায়দুল হক প্রমুখ।
আর অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম গ্যাদা, অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার ও অ্যাডভোকেট সনৎ কুমার আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা বলেন, আমরা বিজ্ঞ আদালতের কাছে আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছি। আমরা বলেছি- সেই দিনের ঘটনার সঙ্গে সব আসামি-ই জড়িত।
‘যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আগামী বুধবার মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমরা আদালতের কাছে আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি আবেদন করেছি। ’
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেননি। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন। ন্যায় বিচার হলে অভিযুক্তরা খালাস পাবেন বলে আমরা আশা করছি।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে ট্রেনে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুরের দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলের নেত্রী শেখ হাসিনা।
তাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের মুহূর্তে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে আবারও ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি থানার ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে নতুনভাবে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়।
এদিকে মামলা করার পর ওই বছর কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য তা সিআইডিতে পাঠান। পরে তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৯
এমএ/