বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আদালত-২ এর বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামিদের অনুপস্থিতির কারণে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এনিয়ে অষ্টমবারের মতো মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পেছালো।
কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন জাহিদুল হক তামিম ও আনোয়ার হোসেন আদালতে উপস্থিত থাকলেও চার্জশিটভুক্ত তিন আসামি রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান এবং আব্দুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজকে হাজির করা হয়নি।
কারাগার সূত্র জানায়, একমাত্র তামিম ছাড়া বাকি আসামিরা হলি আর্টিজানসহ বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলা মামলার আসামি। বর্তমানে চাঞ্চল্যকর হলি আর্টিজান মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলায় অভিযুক্ত রাজীব, বড় মিজান এবং মাহফুজকে কিশোরগঞ্জ আনা সম্ভব হচ্ছে না।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই (ঈদুল ফিতরের দিন) সকালে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে পুলিশ চেকপোস্টে জঙ্গি হামলা করে নব্য জেএমবির সদস্যরা। এসময় হামলায় চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যসহ ১৪ পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ ২৫০-শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কনস্টেবল জহিরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এছাড়াও কনস্টেবল আনসারুল হককে ময়মনসিংহ সিএমএইচে নেওয়ার পর ওই দিনই দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
জঙ্গি হামলার পরপরই হামলাকারী জঙ্গিদের ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ ও র্যাব। অভিযানে জঙ্গি আবির রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জঙ্গি আবিরের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। এছাড়াও পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলির সময় শোলাকিয়ার সবুজবাগের নিজ বাসায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঝর্ণা রাণী ভৌমিক নামে এক গৃহবধূ মৃত্যু হয়। ওই সময় র্যাবের হাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অপর জঙ্গি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকার শফিউল ইসলাম ধরা পড়ে। এসময় কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা এলাকার তানিম নামে এক যুবকও আটক হয়। পরবর্তী সময়ে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শফিউল নিহত হন।
২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান তদন্ত শেষে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এ জঙ্গি হামলায় ২৪ জনের সম্পৃক্ততার কথা উঠে এলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় ১৯ জন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় অভিযোগপত্রে আসামির তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় গত বছরের ২৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতে পাঁচ জঙ্গি বড় মিজান, রাজিব, সোহেল মাহফুজ, আনোয়ার হোসেন ও জাহিদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
জঙ্গি মিজান চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবপুর উপজেলার হাজারদিঘা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে, রাজিব গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পশ্চিম রাঘবপুর ভূতমারা গ্রামের মৃত মাওলানা ওসমান গণির ছেলে, সোহেল কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সাদপুর কাতলিপাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে, আনোয়ার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পান্থাপাড়া গ্রামের মৃত হাকিম উদ্দিন আকন্দের ছেলে এবং তানিম কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর আসামিদের উপস্থিতিতে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার পর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৯
এসআরএস