রিয়াদ: ত্যাগের মহিমা ও পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের নিমিত্তে সৌদি আরবে যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উত্সব পবিত্র ঈদুল আজহা।
ফজরের নামাজ আদায়ের পরপরই দল বেঁধে ঈদের জামায়াতে অংশ নিতে ঈদগাহ ময়দানের উদ্দেশে রওনা হন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
মক্কার কাবা শরীফ, মদিনার মসজিদে নব্বী ছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের অসংখ্য মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় মসজিদের ভেতরে প্রথম সারিতে ঈদের নামাজ আদায় করেন সৌদি আরবের বেশ কয়েকজন আমির এবং শেখরা।
নামাজ শেষে চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী একে অপরের সঙ্গে কুলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এই ঈদ সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের ত্যাগ, আত্মসমর্পণের শিক্ষা দেয়। তাই এ দিনকে কোরবানির ঈদও বলা হয়।
পবিত্র এই দিনে আল্লাহর পথে প্রিয় জিনিস হিসেবে পশু উৎসর্গ করা হয়। কোরবানির ভেতর দিয়ে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিকে অগ্রসর হয় মুসলিম সম্প্র্রদায়। ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। শুক্রবার পবিত্র নগরী মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ লক্ষাধিক মুসলমান হজ পালন করেছেন।
অনাবিল আনন্দে ভাসছে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর নারী-পুরুষ, শিশুসহ আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই দিনে আল্লাহর নবী হযরত ইব্রাহিম (আ.) এবং পুত্র ইসমাঈল (আ.) এর মহান স্মৃতিকে স্মরণ করছেন সবাই। ঈদুল আজহার সালাত শেষে পরস্পরের মধ্যে শুভেচ্ছা ও ভালবাসা বিনিময় করবেন মুসলিমরা। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করবেন পশু কোরবানি।
ঈদুল আজহা মুসলিম মিল্লাতের পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার ছেলে হযরত ইসমাঈল (আ.) এর সঙ্গে সম্পর্কিত। হযরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে ছেলে ইসমাইলকে আল্লাহর শানে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আসলে আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হযরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা।
তিনি ছেলেকে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ফলে সঙ্গে সঙ্গে ছেলে ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কুরবানি করার নির্দেশ আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কুরবানির বিধান এসেছে ইসলামি শরিয়তে।
এজন্য প্রতি বছর সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৪