রিয়াদ: বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত আড়াইটা। রিয়াদের জাতীয় ধীরা মসজিদ এলাকায় রাস্তা পরিস্কারের কাজ করছেন বি বাড়ীয়া জেলার আখাউড়া থানার শহীদুল ইসলাম এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মোঃ আল আমিন।
চাদঁ রাতে সবাই যখন ঈদ উপভোগের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত ঠিক তখন গায়ে হলুদ জামা জড়িয়ে ঝাড়ু আর বাকেট নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছেন শহীদুল আর আল আমিন। রাত দেড়টা থেকে পরদিন দুপুর বারোটা পর্যন্ত কাজ করতে হবে তাদের।
কাজ করা অবস্থায় দুজনের সাথে কথা হয় বাংলানিউজের।
শহীদুল চার বছর আর আল আমিন ২ বছর হয় সৌদি আরব এসেছেন। কেউ এখনো একবারও দেশে যায়নি ছুটিতে। তিন বছর পর পর কোম্পানি ছুটি দেয় কিন্তু ৬ রিয়াল বেতনের চাকরি দেশের যাওয়ার স্বাদ মিটিয়ে দেয় তাদের।
ঈদ কিভাবে কাটাবেন জানতে চাইলে আল আমিনের সহজ উত্তর গরীবের ঈদ নেই।
রান্না করে আসছেন নাকি বাসায় গিয়ে করবেন? শহিদুল জানালেন কেন্টিন আছে সেখানে সবার রান্না হয়। ঈদে কেন্টিনে বিশেষ রান্না হয় কিনা জানতে চাইলে আল আমিন বলেন, ঈদের বিশেষ খাবার বলতে গোস্ত রান্না হয় আর গোস্ত প্রতি সপ্তাহেই থাকে।
ঈদে কয়দিন ছুটি জানতে চাইলে তারা বলেন সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় ছুটি নাই। প্রতিদিন ডিউটি আর একদিন ডিউটি মিস করলে কয়েকদিনের বেতন কেটে নেয়া হয়।
বিয়ে করবেন কবে জিজ্ঞেস করলেই মৃদু হেসে শহীদুল বলেন, সাত লাখ টাকা খরচ করে আসছি মাসে বেতন পাই ৬০০ রিয়াল। এখনো ঋণই শেষ হয়নি।
ঋণ শেষ করে কিছু পুঁজি নিয়ে দেশে গিয়ে বিয়ে করবেন বলেও জানান আখাউড়ার ছেলে শহীদুল।
ঈদ আসে ঈদ যায় ভাগ্য বদলায় না আল আমিন আর শহীদুলদের। মরুভূমির তপ্ত রোদ কিং অঝোর ধারায় বৃষ্টি তাদের কাজ থেকে অবসর নেয়ার ফুসরত নেই শ্রমিক শ্রেণীর প্রবাসীদের। তারপরেও তাদের শান্তনা একটাই নিজের উপার্জিত পয়সা দিয়ে সুখে আছে তাদের পরিবার।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৫
এনএস/