রিয়াদ: গতবছর হঠাৎ করে তেলের দাম নেমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরবে। আর সে কারণে বড় বড় অনেক কোম্পানি পড়েছে বড় ধরনের অর্থসংকটে।
বড় বড় প্রকল্পের বিল আটকে যাওয়া এবং নতুন করে প্রকল্প চালু না হওয়ায় প্রতিদিনই বেকার হচ্ছে শতশত শ্রমিক। অনেক কোম্পানি তাদের সংকটাবস্থা কাটাতে শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে স্পন্সরের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করা এবং স্পন্সরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় অবৈধভাবে থেকে যাওয়া প্রবাসীরা। দীর্ঘদিন কাজ না থাকা এবং কাজ করেও মাসের পর মাস বেতন না পাওয়ায় খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটছে এসব প্রবাসীর।
বাংলানিউজের কথা হয় পুলিশের গাড়িতে থাকা সাজেদুল ইসলামের (ছদ্মনাম)। কি কারণে আটক হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছে করেই ধরা দিয়েছি। ৬মাস ধরে কাজ নাই। এর আগে ৩ মাসের কাজের বেতন পাইনি। দেশ থেকে টাকা এনে কিছুদিন খেয়েছি। এখন আর কোনো উপায় না দেখে পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছি। আর এতে করে টিকেটের টাকাটা দেশ থেকে আনতে হবে না। বিনা পয়সায় দেশে যেতে পারবো। ’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ পুলিশের অভিযান চলে আর তখন তাদের হাতে আটক হন অবৈধভাবে বসবাস করা বিপুল সংখ্যক প্রবাসী। এর মধ্যে ভারতীয়,পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশিদের সংখ্যাই বেশি। আর এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী আছেন, যারা বিমান টিকিট কেনার টাকা বাঁচাতে স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে ধরা দিচ্ছেন।
বড় ধরনের কোন মামলা বা অভিযোগ না থাকলে দূতাবাসের অনুমোদন সাপেক্ষে আটককৃত প্রবাসীদের ১/২ সপ্তাহের মধ্যে সৌদি সরকারের নিজস্ব খরচে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াদ দূতাবাসের একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, বর্তমানে সব সফর জেলেই (ডিপোর্টেশন সেন্টার) প্রচুর বিদেশি আটক রয়েছেন। প্রতিদিন দূতাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা ডিপোর্টেশন সেন্টারে গিয়ে তাদেরকে দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য আউটপাস (ট্রাভেল পাস) দিচ্ছেন।
আটককৃত বাংলাদেশিদের সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই বাংলাদেশিরা আটক হচ্ছেন। তাই নির্ধারিত সংখ্যা বলা কঠিন। তবে প্রতিদিন যেমন আটক হচ্ছেন তেমনি প্রতিদিনই ৫০/১০০জন করে বাংলাদেশে ফেরত যাচ্ছেন। আর তাদের দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য বিনামূল্যে বিমান টিকেট দিচ্ছে সৌদি সরকার। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৩২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
জেএম/