চলনবিল (নাটোর) থেকে ফিরে: চলনবিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল ও সমৃদ্ধতম জলাভূমিগুলোর একটি। দেশের সর্ববৃহৎ এ বিল বিভিন্ন খাল ও জলখাত দিয়ে পরস্পর সংযুক্ত অনেক ছোট ছোট বিলের সমষ্টি।
বর্ষাকালে সব একসঙ্গে একাকার হয়ে প্রায় ৩শ ৬৮ বর্গ কিমি এলাকার একটি জলরাশিতে পরিণত হয়। বগুড়া, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলা জুড়ে বিস্তৃত চলনবিল। শুধু নাটোর অংশে বিলের বিস্তৃতি প্রায় ৩১ কিমি।
নাটোরকে আলাদা করে বলার কারণ, সম্প্রতি এই অংশের চলনবিল ঘুরে এসেছে বাংলানিউজের বিশেষ দল। মেঘলা আকাশ মাথায় নিয়ে বালুয়া বাসুয়া চৌরাস্তা থেকে যাত্রা শুরু হয়। এখান থেকেই চলনবিল নাটোরের সিংড়া অংশের বুক ফেঁড়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পর্যন্ত চলে গেছে ২৮ কিলোমিটারের সড়ক। বেলা বারোর সূর্য মাথার উপর থাকলেও কুয়াশা তখনও কাটেনি। বাহন হিসেবে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা।
সেই ভ্রমণ থেকেই বিলের পথ ও প্রান্তর নিয়ে এবারের ধারাবাহিক আয়োজন। চোখ-মন ছুঁয়ে গেছে সবুজের সমারোহ, বকের ওড়াউড়ি, দূরের গ্রাম, জল-মাটি-মানুষসহ আরও কত কী! বিপুলা এ বিলের যতোটুকু চোখে ধরেছি, তার একশো ভাগের এক ভাগ ধরা গেছে ক্যামেরার ফ্রেমে। চলতি পর্বের মুহূর্তগুলো দেখে নেওয়া যাক।
সিংড়া থেকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পর্যন্ত এঁকেবেঁকে চলে গেছে কংক্রিটের ২৮ কিলোমিটার সড়ক। যাত্রাপথে হাত নাড়লো কলমির ঝাড়।
শুধু চলনবিল নয়, গোটা নাটোর জেলাতেই ব্যাটারিচালিত তিন চাকা-চার চাকার যানের দাপটে প্রায় উঠে যেতে বসেছে প্যাডেলচালিত রিকশা। তবু বিলের বুকে সৌভাগ্যবশত দেখা মিললো এরও। ব্যাটারিচালিত হাজারো রিকশার ভিড়ে প্যাডেলচালিত রিকশা যেনো বড় একা!
চলতি পথে পড়লো সিংড়া-বারুহাস-তাড়াশ-চলনবিল সড়কের প্রথম সেতু। এটির চেইনেজ ১৫শ মিটার।
মাঠে এখন ইরি লাগানোর ধুম, দিনভর কাজ। বাড়ি যাওয়ার ফুসরত নেই। তাই কাজের ফাঁকে জিরিয়ে নিতে অস্থায়ী ঘর।
অপ্রস্তুত ক্যামেরার ফ্রেম। এর মধ্যেই যেনো অপার বন্ধুতাই মেতে উঠলো সাদা বক আর পানকৌড়ি। কী আর করা, ঝটপট ক্লিকে যতোটুকু ধরা গেলো তাদের।
বিলের এ অংশে ইরি লাগানো সারা। এবার প্রয়োজন পরিচর্যা। জায়গায় জায়গায় বসে গেছে পানি সেচের শ্যালো মেশিন। একে রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে ছোট ছোট ঘর।
সড়কের প্রথম অংশের দু’ধারে ইউক্যালিপটাসের আধিক্য দেখা গেলেও, দ্বিতীয় সেতুর পরেই দেখা মিললো গুটি কয়েক তালগাছের।
ইউক্যালিপটাসের আধিক্যের কথা আগেও বলা হয়েছে, এরই এক ঝলক।
ওই দূরে দেখা যায় ডেওয়াবাড়ি গ্রাম। দৃষ্টি আরও প্রসারিত করলে উঁকি দেয় বাড়ি আর খড়ের গাদা।
চলনবিল সড়কের গা ছুঁয়ে মাটির রাস্তা গেছে ডেওয়াবাড়ি। ‘তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়’।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬
এসএস/এএ/এটি
** চলনবিলের পথে-প্রান্তরে (পর্ব ২)
** চলনবিলের পথে-প্রান্তরে (পর্ব ১)
** আমহাটীর চামড়ায় সারাদেশে বাজে ঢাক-ঢোল
** ডুবো সড়কে ডুবছে চলনবিল
** ঝাড়ফুঁক-সাপ ছেড়ে ইমারতের পেটে!
** বিলের মাছ নেই চলনবিলের বাজারে (ভিডিওসহ)
** চলনবিলে হাঁস পুষে লাখপতি (ভিডিওসহ)
** হালতি বিলে দাগ কেটে ক্রিকেট, ধুমছে খেলা (ভিডিওসহ)
** ভাসমান স্কুলে হাতেখড়ি, দ্বীপস্কুলে পড়াশোনা
** দত্তপাড়ার মিষ্টি পান ঠোঁট রাঙাচ্ছে সৌদিতে
** একফসলি জমিতেই ভাত-কাপড়
** লাল ইটের দ্বীপগ্রাম (ভিডিওসহ)
** চলনবিলের শুটকিতে নারীর হাতের জাদু
** ‘পাকিস্তানিরাও সালাম দিতে বাধ্য হতো’
** মহিষের পিঠে নাটোর!
** চাঁপাইয়ের কালাই রুটিতে বুঁদ নাটোর
** উষ্ণতম লালপুরে শীতে কাবু পশু-পাখিও!
** পানি নেই মিনি কক্সবাজারে!
** টিনের চালে বৃষ্টি নুপুর (অডিওসহ)
** চলনবিলের রোদচকচকে মাছ শিকার (ভিডিওসহ)
** ঘরে সিরিয়াল, বাজারে তুমুল আড্ডা
** বৃষ্টিতে কনকনে শীত, প্যান্ট-লুঙ্গি একসঙ্গে!
** ভরদুপুরে কাকভোর!
** ডুবো রাস্তায় চৌচির হালতি
** হঠাৎ বৃষ্টিতে শীতের দাপট
** ঝুড়ি পাতলেই টেংরা-পুঁটি (ভিডিওসহ)
** শহীদ সাগরে আজও রক্তের চোরা স্রোত
** ‘অলৌকিক’ কুয়া, বট ও নারিকেল গাছের গল্প
** মানবতার ভাববিশ্বে পরিভ্রমণ
** সুধীরের সন্দেশ-ছানার জিলাপির টানে
** নতুন বইয়ে নতুন উদ্যম