ঢাকা: বাংলাদেশে যত বিদেশি আসেন তার ৯৩ ভাগ নিজ দেশে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে আসতে অন্যদের উৎসাহিত করেন। এসব বিদেশির কারও চোখে বাংলাদেশ ‘পৃথিবীর সেরা ফটোজেনিক দেশ’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক যৌথ সমীক্ষায় এই সুখবর জানা গেছে।
ঢাকায় আগত বিদেশিদের উপর প্রায় ৯০ দিনের বেশি তত্ত্ব অনুসন্ধান করে এমন ফলাফল পেয়েছে সমীক্ষা দল।
গেল বছর থেকে শুরু করে অনুসন্ধান শেষ হয় এ বছরের শুরুতে। আন্তর্জাতিক কোন জার্নালে এই ফলাফল এখন প্রকাশের অপেক্ষায়।
গেল বছরের শেষদিকে স্পেন থেকে বাংলাদেশ ঘুরতে আসেন কুড়িজনের একটি বিদেশি পর্যটক দল। তাদের টিম প্রধান মিগুয়েল মাসিয়েস বাংলাদেশ নিয়ে তার মুগ্ধতা জানিয়েছিলেন এভাবে- ‘ বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখানে কোনো তাজমহল নেই, রাজস্থানও নেই। কিন্তু দেশটির রাস্তায় রাস্তায় জীবনের জয়গান আছে, অফুরন্ত প্রাকৃতিক দৃশ্য আছে, জীবন আছে, গঙ্গা-যমুনা আছে, ম্যানগ্রোভ আছে। এটি একটি দেশ, যেটিকে বলা হয় “ল্যান্ড অব রিভার”, বলা হয় “ল্যান্ড অব লাইফ”। ’
এই কুড়িজনের দল এর আগে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানে ভ্রমণ করেছিলো।
অস্ট্রিয়া থেকে এসেছিলেন একজন পর্যটক যিনি যাবার আগে বলে গিয়েছিলেন, বাংলাদেশ তার দেখা পৃথিবীর তৃতীয় শ্রেষ্ঠ দেশ। প্রথম কিউবা।
বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ আরেক বিদেশি বলেছেন, ‘আপনি তখনই বুঝবেন আপনি বাংলাদেশে যখন হোটেল থেকে বেরিয়ে হাঁটার পথে একজন হাসিমুখে আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইবে। কথা বলার পর এক কাপ চা খেতে বলবে। চা খাওয়ার পর বাসার যাবার আমন্ত্রণ করবে। আর এটা যদি না হয় তাহলে আপনি বুঝবেন আপনি বাংলাদেশে নয়, অন্য কোথাও আছেন।
ট্রিপ টু বাংলাদেশ নামে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা ট্যুরস অপারেটর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে বেড়াতে আসা আরেকজন পর্যটক বলেছেন, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ফটোজেনিক এলাকা বাংলাদেশ।
ট্রিপ টু বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদ হাসান খান জানান, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চল বিদেশিরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন।
মাসে কয়েকটি বিদেশি পর্যটক দলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা এই ট্রিপ টু বাংলাদেশের প্রধান মাহমুদ বলেন, দেশে আসা বিদেশিরা কখনো বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। তারা দেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে বার বার আসতে চেয়েছেন। তাদের মাধ্যমে অন্যরা আসতে চান বাংলাদেশে। এদের অনেকেই দেশে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে ব্লগ লেখেন। যা দেখে আরও পর্যটক বাংলাদেশে আসতে যোগাযোগ করেন।
তবে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির যে সমীক্ষা দল বাংলাদেশে ঘুরতে আসা বিদেশির উপর জরিপ করেছিলো তারা জানায়, বিদেশিদের বেশিরভাগ প্রথমেই থাকার ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে চান।
পরিসংখ্যানগত দিক তুলে ধরে এই গবেষক দল জানায়, ‘৫ এর মধ্যে ৩ দশমিক ৫৯ ভাগ ভ্রমণের আগে থাকার ব্যবস্থা এবং ৩ দশমিক ৮ ভাগ ভ্রমণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন তা জানতে চেয়েছেন।
এছাড়াও ৩ দশমিক ৫১ ভাগ দেশের ইমেজ, ৩ ভাগ খাবারের মান, ৩ দশমিক ৮ ভাগ অবকাঠামোগত সুবিধা, ৩ দশমিক ৮ ভাগ পরিবেশগত দিক জানতে চেয়ছেন ভ্রমণ শুরুর আগেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
এসএ/জেডএম