কক্সবাজার থেকে: হাতে কলার খোসা নিয়ে উঁচু রাস্তা থেকে সিঁড়ি বেয়ে আশপাশে কী যেন খুঁজছিলেন দুই সহকর্মী। নামার সময় সিঁড়ির বায়ে ময়লার স্তূপ।
এ চিত্র কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্র সৈকতের।
ময়লা ফেলার নির্ধারিত কোনো স্থান না পেয়ে এক ডাব বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলাম ময়লা ফেলবো কোথায়? উত্তর দিলেন, এখানেই ফেলেন। আশেপাশে কোনো ময়লার ঝুড়ি নেই। কেন নেই জানতে চাওয়ায় তিনি বিচ কর্মীকে দেখিয়ে দিলেন। সেখানে চার/পাঁচটি ডাবের দোকানের একটিতে বসে ছিলেন বিচ কর্মী মো. বেলাল।
ময়লা ফেলবো কোথায় জানতে চাইলে তিনি ‘লজ্জিত’ হয়ে জানালেন, এখানে ময়লা ফেলার নির্ধারিত কোনো স্থান নেই। বললাম, সবাই তো ময়লা হাতে নিয়ে ঝুড়ি খুঁজবে না, কিছুটা দূরত্বে ময়লার ঝুড়ি রাখা দরকার।
একমত পোষণ করে এও বললেন, বিচের চেয়ারগুলোর সঙ্গে বেশ কয়েকটি ঝুড়ি দিয়েছে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি। কিন্তু রাস্তা থেকে বিচ পর্যন্ত বেশ অনেকটা পথ। এতোটা জায়গায় ডাস্টবিন না থাকায় পর্যটকরা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলতে বাধ্য হচ্ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে বিচের পরিবেশ।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিবও।
বাংলানিউজের সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি জানালেন আরও ভয়াবহ তথ্য। বললেন, এখানে কোনো শৌচাগার (টয়লেট) নেই। এমনকি একটি চাপকলও (টিউবওয়েল) নেই। ফলে সাগরে গোসল শেষে বালুমাখা ভেজা পোশাকেই পর্যটকদের গন্তব্যে ফিরতে হয়।
মুজিবের কথায় সায় দিয়ে বিচ কর্মী বেলাল জানান, একবার এক নারীর ফ্রেশ হওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখানে তো বাথরুম নেই। দীর্ঘ সময় ফ্রেশ হতে না পেরে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
তারা বলেন, বিচে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। রাতের অন্ধকারে ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের বিপদ ঘটতে পারে, এমন শঙ্কা থাকে পর্যটকদের। তাই সন্ধ্যা নামার আগেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিচ ছাড়তে হয় তাদের। ফলে দ্বিতীয়বার অপরূপ এই বেলাভূমিতে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অনেকে।
সরকার এ বছরকে পর্যটন বছর ঘোষণা করেছে। এর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে বাংলানিউজ। এরই অংশ হিসেবে বিশেষ আয়োজন “বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ”। এনিয়ে ৯ এপ্রিল বাংলানিউজ আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিচ্ছেন পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
এসব কথা জেনে বাংলানিউজের মাধ্যমে মন্ত্রীর কাছে সমস্যা সমাধানের আবেদন জানান তারা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন কয়েকজন পর্যটকও।
দোকানি ইমরানসহ অনেকে বলেন, এবার ইনানী থেকে রাজস্ব খাতে যুক্ত হচ্ছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ইনানীর নাম পর্যটন স্পটের তালিকায় আছে, কিন্তু কাজে নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৬
এসআই/এটি
** টিপলে ২০০, কিনলে ডিসকাউন্ট
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ