কক্সবাজার থেকে: বাংলাদেশে লাইফগার্ডিংটা একটি শ্রেণির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। যারা পানির কাছাকাছি থাকছেন, যাদের সব কার্যক্রম পানিকেন্দ্রিক, তারাই লাইফগার্ড হচ্ছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাইফগার্ডিং একটি পেশন। সেখানে এটি সম্মানের চোখে দেখা হয়। তারা স্টুডেন্ট অবস্থা থেকেই লাইফগার্ড হতে চান। দুই থেকে তিন বছরের জন্য ভলান্টিয়ার লাইফগার্ড হয়ে কাজ করেন। পরে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন। তাদের জীবনে লাইফগার্ডিং বড় অভিজ্ঞতা হিসেবেই থেকে যায়।
তিনি আরো বলেন, ভালো কোনো স্কুলের শিক্ষার্থী এ পেশনের দিকে ঝুঁকছে না। কিন্তু এখানে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, আমি মানুষের জীবন রক্ষা করছি। এ কারণে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মিশে আমরা কাজ করছি। যাতে লাইফগার্ডের প্রশিক্ষণটি অনেকেই নেয়।
এ সীমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আর এ জন্যই আমরা কাজ করছি বলেও উল্লেখ করেন ইমতিয়াজ আহমেদ।
আইডিআরসিবি বাংলাদেশের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং পানিতে ডোবা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কাজ করছে। সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে রয়্যাল ন্যাশনাল লাইফবোর্ড ইনস্টিটিউশন অর্গানাইজেশন (আরএনএলআই)।
‘কিন্তু সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনো আর্থিক সহযোগিতা আমরা পাইনি। আমরা চাই এ প্রোগ্রামের কার্যক্রম সরকারের লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধীনে যাক। কারণ এতে আরও লাইফগার্ড বৃদ্ধি পাবে। ’
সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমরা আরও বেশি অগ্রসর হতে পারবো বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটি এবং লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এসব কার্যক্রমে একটি বিশাল অবদান রাখে উল্লেখ করে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটাই সত্যি যে তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অনেক কম। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ, ডিসি অফিসের সঙ্গে আমাদের ভালো যোগাযোগ রয়েছে।
আমাদের কার্যক্রমের জন্য একটি অফিস দরকার। এটিও একটি সমস্যা। কিন্তু বিচে অফিস পাওয়া একটু কষ্টকর। যদিও আমরা প্রশাসনিকভাবেই চেয়েছি, কিন্তু পাইনি। তবে আশা করছি পাবো। এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশের ওয়াচ টাওয়ারে নিচে একটি স্টোর রুমে আমাদের বসতে হচ্ছে এবং রেসকিউ বোর্ড ও বিভিন্ন সরঞ্জাম রাখতে হচ্ছে। আমাদের এসব রাখার জন্য একটি বড় জায়গার প্রয়োজন।
এদিকে সরেজমিনে বাংলানিউজের চোখে পড়ে, বিচে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। কিন্তু সেগুলোতে কোনো লাইফগার্ড নেই। কারণ সেই টাওয়ারগুলো ব্যবহারের জন্য কোনো অনুমতি নেই। তাই সেগুলো শুন্য হয়েই রয়েছে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিচের ওয়াচ টাওয়ার থাকলেও আমাদের ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। এগুলো ব্যবহার করতে পারলে আমরা আরও ভালো সার্ভিস দিতে পারবো।
ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সি-সেইফ বর্তমানে লাবনী ও সুগন্ধা পয়েন্ট বিচে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ধীরে ধীরে আমরা কলাতলী বিচ, ইনানী বিচ, টেকনাফ বিচ এবং সেন্টমার্টিনের কার্যক্রম অগ্রসর করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফুলটাইম না হলেও যেনো সিজনাল সার্ভিস দিতে সক্ষম হয় সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এবছর আমার কুয়াকাটা বিচে রিসার্চ শুরু করেছি। আগামী বছর (২০১৭) থেকে কুয়াকাটা বিচে কার্যক্রম শুরু করবো।
ছুটির দিনে সব স্টাফদের নিয়ে কাজ করি। আমরা চাই বিচে সবাইকে নিরাপদে রাখতে এবং সমুদ্রের ব্যবহার সম্পর্কে নির্দেশনা দিতে। নানা সমস্যার মধ্যেও আমরা কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৬
এসজেএ/জেডএস
** প্রিভেন্টিভ অ্যাকশন নিয়ে কাজ করছে লাইফগার্ড
** কক্সবাজার বিচে রাতে জ্বলে না বাতি
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ