টেকনাফ থেকে ফিরে: টেকনাফ বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যে ঢুকে সামনের পথ ধরে কয়েক পা এগোলেই ডানে একটি বিলবোর্ড। সেখানে অভয়ারণ্যের প্রাথমিক তথ্য ধাপে ধাপে তুলে ধরা হয়েছে।
বিলবোর্ডের জীববৈচিত্র্য অংশে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী সমীক্ষা অনুযায়ী, চুনতি বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যে ৫৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ২৮৬ প্রজাতির পাখি, ১৩ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৫৬ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ২৯০ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে।
বেশ ভালো উদ্যোগ। পর্যটকরা শুরুতেই পেলো অভয়ারণ্য সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা। কিন্তু টেকনাফ বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যে ঢুকে ‘চুনতি’ অভয়ারণ্যের গুণগান কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেশিদূর যেতে হলো না। বিলবোর্ডে অভয়ারণ্যের বিষয়ে বাংলা বর্ণনার পাশাপাশি সেটি ইংরেজিতেও লেখা রয়েছে। সেখানে টেকনাফ অভয়ারণ্য লেখা থাকলেও বাংলায় অনুবাদ করতে এসে ঘাপলাটা হয়েছে। টেকনাফের জায়গায় বসে গেছে ‘চুনতি’।
টেকনাফ অভয়ারণ্যে গিয়ে ভুলের এ চিত্র ধরা পড়ে। বিলবোর্ডটি দেখে মনে হলো, বেশ আগেই সাঁটানো হয়েছে। অথচ এতোদিন কীভাবে এটি কর্তৃপক্ষের চোখে পড়লো না? নাকি দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে চলা!
উল্লেখ্য, চুনতি লোহাগাড়া-সাতকানিয়ার একটি এলাকা। সেখানেও একটি অভয়ারণ্য রয়েছে।
টেকনাফের ১১ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমির ওপর এই অভয়ারণ্য। ১৯৭৪ সালের বণ্যপ্রাণি সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন অনুযায়ী, ১৯৮৩ সালে এটিকে গেম রিজার্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১২ সালে বনটিকে বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
সরেজমিনে অভয়ারণ্যে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে প্রায় পনের মিনিট পর আবদুল মালেক নামে এক বনরক্ষী আসেন।
তিনি জানান, তিনি ছাড়াও আনিছুর রহমান নামে আরও একজন বনরক্ষী দায়িত্বে রয়েছেন এখানে।
অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা ছাদেকুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার চোখে পড়েনি। আমি অভয়ারণ্যে গেলে সেটি দেখবো।
এদিকে তিন দিন পর তার সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনারা বলার পর আমি অভয়ারণ্যে গিয়ে বিলবোর্ডটি দেখেছি। সেখানে টেকনাফের জায়গায় চুনতি লেখা আছে। আসলে আমি এতোদিন খেয়াল করিনি। আমি দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র দুই মাস হলো। ওটা ঠিক করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। দ্রুতই ঠিক করে দেওয়া হবে।
ছাদেকুর রহমান জানান, এই অভয়ারণ্যে প্রায় ১৩টি হাতি, নানা প্রজাতির হরিণ, শূকর, বনমোরগ, শিয়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর বিচরণ রয়েছে। পাশাপাশি নানা ধরনের উদ্ভিদ রয়েছে অভয়ারণ্যে। এখানে প্রবেশ করতে হলে দর্শনার্থীদের ২০ টাকার টিকেট কাটতে হয়।
অভয়ারণ্যের প্রবেশমুখেই বিলবোর্ডটি। সুতরাং দর্শনার্থীরাও প্রথমে সেখানে চোখ রাখতে চাইবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেখানেই যদি বাংলায় লেখা বর্ণনায় বলা হয় ‘চুনতি অভয়ারণ্য’, তাহলে একটু বিপাকেই পড়তে হবে বৈকি!
সঙ্গে থাকা স্থানীয় সাংবাদিক জসিম উদ্দিন বলেই দিলেন, এই বনে আসা দর্শনার্থীদের অধিকাংশই স্কুলশিশু ও ইংরেজি পাঠে অক্ষম ব্যক্তি। তারা তো বাংলা বর্ণনা পড়ে এটিকে চুনতি অভয়ারণ্যের অংশবিশেষ মনে করে বসবে। তখন!
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৬
টিএইচ/আইএ/এসএনএস
** সৈকত পাড়ে বাংলানিউজের ঝলমলে সন্ধ্যা
** বাংলানিউজের সুপারিশের অপেক্ষায় থাকবো: পর্যটনমন্ত্রী
** কক্সবাজারেই আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পরিকল্পনা
** উন্নয়ন না করলে জনগণের গালি খেতে হয়
** ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করে বিদেশিদের আমন্ত্রণ জানান
** শুধু হোটেল করলেই বাণিজ্য হয় এই ধারণা ভুল
** বিচে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দেয় ট্যুরিস্ট পুলিশ
** ‘পর্যটনবান্ধব শহর গড়তে সবার সহযোগিতা দরকার’
** নগর পরিকল্পনাবিদদের রোডম্যাপে সাজাতে হবে কক্সবাজার
** কক্সবাজার নিয়ে শতবার্ষিক মহাপরিকল্পনা করতে হবে
** ‘প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে পর্যটন সম্ভাবনা তুলে এনেছি’
** সাগর পাড়ে শুরু বাংলানিউজের ‘কক্সবাজারের পর্যটন’
** বাংলানিউজে কক্সবাজারের পর্যটন চিত্র
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ