ঢাকা: সবুজ ছোট ঘাস তাদের পছন্দ, দিনের বেলা পানিতে ডুবে থাকা স্বভাব। অপছন্দ একা থাকাটা, তা জলে হোক কিংবা স্থলে।
দুপুরের খা খা রোদে অতিষ্ট জলের প্রাণিগুলো সারা দিন ডুবেছিল জলার পানিতে। রোদের উত্তাপের সাথে তাপমাত্রা কিছুটা কমায় বিকাল চারটার দিকে তাদের পাওয়া গেল স্থলে একটি শেডের নিচে।
মোটা মুখে ঘাস চিবানোর দৃশ্য দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছিল, কারণ সব সময় তাদের স্থলে পাওয়া ভার। পানিতে ডুবে থাকতে পছন্দ করে তারা। মুখ হা করলে দেড়শ’ সে.মি. পর্যন্ত খুলে যায়। নিচের দু’টি ছেদন দাঁত ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। ঘাস চিবানোর সময় সেই দাঁতগুলো ছিল স্পষ্ট।
প্রায় আধাঘণ্টা ধরে দুটি বাচ্চাসহ নয়টি জলহস্তি ঘাস চিবানো শেষে একে একে নামছিল পানিতে। আর বাচ্চাটি স্থলেই এক গর্তে কাদায় শরীর চুবিয়ে উত্তাপ কমানোর চেষ্টা করছিল।
স্তন্যপায়ী প্রাণির মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাণী জলহস্তির আহার এবং জলের খেলায় মেতে উঠতে দেখা গেল বুধবার (১৩ এপ্রিল) মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায়। এ দৃশ্য মোবাইলে ক্যামেরা বন্দি করছিলেন কেউ কেউ।
হেলে দুলে একে একে নামছিল পানিতে। এরপর পানিতে ডুব, কিছুসময় পর মাথা উঠিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস। একটু পর পর একজন ডেকে উঠলে সাড়া দিচ্ছিলো অন্যগুলো।
পানির কমতি যাতে না হয় সেজন্য সীমানার জলার মধ্যে বাইরে থেকে পানি দেওয়া হচ্ছে পাইপ দিয়ে। আর সেই পানির ধারায় মাথা উঁচিতে এবং শরীরে পানি নিচ্ছে দু’টি জলহস্তি।
জন্মগতভাবে তাদের পা, কান ও নাক ছোট। মাথার উপর উঁচুতে বসানো চোখ। এ কারণে শরীর ডোবানো থাকলেও মাথার একটি অংশ উপরে থাকলে চোখ দৃশ্যমান।
চিড়িয়াখানার শেষ মাথায় একটি শেডে এখন ৯/১০টি জলহস্তি।
এসব প্রাণির পরিচিতে বলা হয়েছে, আফ্রিকার প্রধান প্রধান নদী, লেক ও জলাভূমিতে তাদের বসবাস। ছোট ঘাস, শাক সব্জি ও ভূষি পছন্দ করে।
নরম মোটা পারপেল বাদামী বর্ণের চামড়া যা নিচের দিকে গোলাপী। পায়ে চারটি আঙ্গুল।
পুরুষের ক্ষেত্রে উচ্চতা ৪ ফুট ৪ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত। এবং ওজন ১৬০০ থেকে ৩২০০ কেজি। দিনের বেলায় নদীতে এবং এবং রাতের বেলা থাকে চারণ ভূমিতে।
এরা ৪-৫ বছরে বয়োপ্রাপ্ত হয় এবং ১৯০-২১০ দিন গর্ভধারণের পর একটি বাচ্চা দেয়। এদের আয়ুস্কাল ৩০ থেকে ৫৫ বছর।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএম