ঢাকা: মনে হবে যেন আমের রাজ্যে এসেছি। চারিদিকে শুধু আম আর আম।
হ্যাঁ, আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ-কানসাটের কথা বলছি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সতের কিলোমিটার দূরে সোনা মসজিদ স্থলবন্দর সড়কের মাঝামাঝি পড়বে শিবগঞ্জ-কানসাট।
পথে যেতে যেতে দেখবেন পুরো রাস্তায় মাথা নুইয়ে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছে ফলের রাজা স্বয়ং। রাস্তায় দাঁড়িয়েই হাত দিয়ে পরম মমতায় ছুঁয়ে দিতে পারবেন তাকে। তার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। বাড়তি উপহার হিসেবে দেখতে পাবেন রাস্তার ধারে থাকা পাকা পাকা লিচু গাছের মনভোলানো সৌন্দর্য।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন ২৫ মে’র আগে আম পাড়তে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে আমযজ্ঞের পুরো দৃশ্য দেখতে মে মাসের শেষ দিকে ম্যাঙ্গো ট্যুরের জন্য সময় নির্ধারণ করলে ভালো। এখন গেলে পাকা আম দেখা কিংবা কেনা যাবে না। তবে কাঁচা আমযজ্ঞ দেখতে পাবেন।
শিবগঞ্জ-কানসাটের বাগানে বাগানে ঘুরে দেখা গেছে আমের ভারে নুইয়ে পড়েছে আম গাছের ডাল। একাধিক খুঁটি দিয়ে ঠেকা দেওয়া হয়েছে ডালগুলো। কোনো কোনো আম মাটির সাথে মিতালি করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্র্যান্ড আম হলো ফজলি। এছাড়াও বাগানে বাগানে ঝুলছে ল্যাংড়া, ক্ষীরসাপাত (হিমসাগর), লখনা (লক্ষণভোগ), গোপালভোগ, চোষা, কোহিতুর, বৃন্দাবনী, গোলাপবাস, জোহরী, দিলসাদপ্রভৃতি আম।
আমচাষি মাসুদ রানা জানালেন, কানসাটের কয়লাবাড়ি থেকে আম বাগান দিয়ে হাঁটতে থাকলে একটানা তিরিশ কিলোমিটার হাঁটলেও আমবাগান শেষ হবে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শরফ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু শিবগঞ্জ উপজেলায় ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে হচ্ছে আম চাষ।
যেভাবে যাবেন:
যেকোনো স্থান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বাস কিংবা ট্রেনযোগে আসতে পারেন। এরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বাস, মাহেন্দ্র কিংবা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় যেতে পারেন শিবগঞ্জ-কানসাট। ভাড়া লাগবে ৫০ টাকা। সকালে এলে একদিনেই শিবগঞ্জ-কানসাট ঘুরে যেতে পারবেন। এরসাথে একঘণ্টা বাড়তি যোগ করে দেখে যেতে পারেন গৌড়ের ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ, তাহখানা ও হযরত শাহ নেয়ামতউল্লাহর মাজার।
একরাত থেকে যেতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আছে কয়েকটি ভালো হোটেল। তবে শিবগঞ্জে রাত্রিযাপন করলে থাকতে পারেন হোটেল প্যারাডাইসে। কানসাটেও হোটেল আব্দুল্লাহ, হোটেল নাজমা, হাজি হোটেল নামে কয়েকটি হোটেল আছে।
ভাড়া একদিনে ২শ’ থেকে ৮শ’ টাকার মধ্যে। তবে এসি রুম নিলে ভাড়া লাগবে সর্বনিম্ন ১২শ’ টাকা। আমের মৌসুমে পর্যটক ও আম ব্যবসায়ীদের বেশ ভিড় থাকে হোটেলগুলোতে। তাই আগেই যোগাযোগ করে আসা ভালো।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৬
এমআই/এমজেএফ/