ঢাকা: ঢাকা টু সিলেট। প্রায় আড়াইশো কিলোমিটারের দূরত্ব।
কিন্তু সরাসরি সিলেট ছাড়া অন্য তিন জেলায় ঢাকা থেকে কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাস নেই। সিলেট রুটে অনেক কোম্পানির বাস চললেও মাত্র এনা পরিবহন ও গ্রিনলাইনের এসি বাস চলছে।
পর্যটনের ক্ষেত্রে সিলেট বেশ আকর্ষণীয় অঞ্চল। হাজার হাজার পর্যটক আর তুলনামূলকভাবে দেশের অন্য অঞ্চলের চেয়ে স্বচ্ছল মানুষদের চলাচল থাকলেও রুটটিতে দু’টি কোম্পানি ছাড়া আর কোনো কোম্পানির এসি বাস নেই। এর মধ্যে তিন বছর আগে লোকসান দেখিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে সোহাগ পরিবহনের এসি বাস।
মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে দিনে ৩টি ও সিলেট কদমতলী টার্মিনাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ৩টি এনা পরিবহনের বাস চলে। আর রাজারবাগ থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে দিনে ৬টি ও সিলেটের হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে ৬টি গ্রিনলাইনের বাস। এর বাইরে সিলেট রুটে কোনো এসি বাস নেই। আর অন্য তিন জেলায় হানিফ, শ্যামলী ও ইউনিক পরিবহনের বাস চললেও তাদের এসি বাস নেই রুটটিতে।
সিলেটের পথে তাহলে বিলাসবহুল কোনো যাত্রার জন্য যাত্রীকে সড়কপথ বাদ দিতেই হবে। এ নিয়ে হতাশ অনেক পর্যটক। এমনকি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে চলাচল করা এমন অনেক যাত্রীরও উপায় থাকে না।
সোহাগ পরিবহনের মালিক ফারুক তালুকদার সোহেল জানান, লাভ হলে এসি বাস সেবা তারা বন্ধ করতেন না। লাভ নাই দেখে এ রুটে তাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস এখন আর চলছে না।
২০১১ সালে সর্বশেষ সোহাগের এসি বাসে চড়েছেন ঢাকার জালাল উদ্দিন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, তখন অনেকেই আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য বেছে নিতেন সোহাগ ও গ্রিনলাইন। এনা পরিবহন তখন ছিলো না। এখন শুধু এনা পরিবহন ও গ্রিনলাইন এসি বাসের সেবা দিচ্ছে। কিন্তু সেবার মান ভালো নয়।
সিলেট ছাড়া যখন পর্যটকদের সরাসরি গন্তব্য হয় চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, তখন সড়ক পথে গেলে বাধ্য হয়েই যেতে হবে সাধারণ বাসে। শ্রীমঙ্গল হয়ে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে প্রথম মৌলভীবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় হানিফ এন্টারপ্রাইজের বাস। শ্যামলীর বাস চলা শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে। এক ঘণ্টা পর পর এই দু’টো কোম্পানির বাস ঢাকার সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায় মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে।
আর মহাখালী টার্মিনাল থেকে এনা পরিবহন এ চারজেলার উদ্দেশ্যে চলাচল শুরু করে সকাল ৬টা ১৬ মিনিট থেকে। রাত ১২টা পর্যন্ত এভাবেই ঢাকা থেকে বাস ছেড়ে যায়। বাস চলাচলের সংখ্যা এবং ছাড়ার এ সময়সূচি জানা গেছে মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস কাউন্টার থেকেই।
সিলেট পরিবহন মালিক সমিতির নেতা বাচ্চু রহমান জানান, দিনে অন্তত কয়েকশো বাস সিলেট আসে শুধু হজরত শাহজালাল ও শাহপরাণ মাজারকে কেন্দ্র করে। কোনো বাস খালি আসা যাওয়া করে না।
সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাস্ট্রির সহ-সভাপতি হাসিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা থেকে সিলেটে প্রতি শুক্র ও শনিবার, এই দুই দিন প্রতি দিনে বিশ হাজার পর্যটক আসেন। যারা শুধু মাজার জিয়ারত ও আশেপাশে ঘোরেন।
তার কথার সূত্র ধরেই বাস কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এ দু’দিন যাত্রী চাহিদা বেশি বলে অনেক সময় টিকিট পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। আগে থেকে টিকিট না করলে শুক্র ও শনিবার এনা ও গ্রিনলাইনের এসি বাসের টিকিট মেলে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
এসএ/জেডএস/এসএনএস