কাছাড়িয়া হাওর, সুনামগঞ্জ থেকে: সুনামগঞ্জ শহর থেকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। সুরমা ব্রিজ পেরিয়ে উত্তরে এগিয়ে পশ্চিমে মোড় নিলে দু’পাশে শুধু বিল আর হাওর।
হাওরের সবচেয়ে পরিচিতি দৃশ্য এটি। পরিযায়ী ও দেশি পাখির পাশাপাশি যে গৃহস্থ প্রাণীটি হাওরে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সেটি হাঁস। যাত্রাপথে ঝাঁকে-ঝাঁকে ঘুরে বেড়ানো হাঁস দেবে বাড়তি আনন্দ।
হাওরে এসে এতো গরু একসঙ্গে চারণভূমিতে দেখলে খুব অবাক হওয়ার কথা। কিন্তু একফসলি জমি হওয়ায় হাওরাঞ্চলের মানুষের কাছে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি মূল্যবান পালিত পশু-পাখি। এখনও পুরোপরি ডোবেনি চারণভূমিগুলো। তাতেই উঁচু ভূমিতে পানি-কাদা ঠেলে পেট জুড়াচ্ছে গরুগুলো।
উদরপূর্তি শেষ। হাওরে গো-ধূলি দেখার সুযোগ নেই। তবে গোধূলি লগ্নেই পানি টেলে ঘরে ফিরতে উদ্যত তারা।
লালপুর ব্রিজ থেকে নেমে যাওয়া রাস্তাটি যতই সামনে এগিয়েছে ততই বেড়েছে সৌন্দর্যের সপ্তস্বর।
একপাশে জমে গেছে পানি। গ্রামগুলো অর্ধডোবা হয়ে পরিণত হচ্ছে দ্বীপে। মাঝে পানিভেজা সবুজ ঘাসের সঙ্গে মিতালি গরু-ঘোড়ার। দূরে দিগন্তজুড়ে মেঘের ঘনঘটা। তার ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সুউচ্চ পাহাড়।
বর্ষায় হাওর অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে নৌকাই একমাত্র বাহন। মাছ ধরাও হয়ে ওঠে ছয়মাসের পেশা। পরিবারের ছোট্ট সদস্যটিকে নিয়ে বাবা যেন নিচ্ছেন সে প্রস্তুতি।
লগি ঠেলে, বৈঠা বেয়ে এসময় যেতে হয় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে, একবাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে। অন্য পেশা ছেড়ে এসময় অনেকে বনে যান মাঝি।
ভরবর্ষায় গরুর খাবার সঞ্চয় করে রাখা পলগাদা বা খড়গাদা। শুকনো এ খাবারটিই হয়ে যাবে কয়েক মাসের প্রধান খাবার।
আরও পড়ুন..
** মায়ার বাঁধনে মায়া, সঙ্গী জেমস-মনা
** এবার আসছে গৌরাঙ্গের সাত লেয়ারের জুস
** সবুজের বুক চিরে চেনা নতুন শ্রীমঙ্গল
** সাদা-কালো নাগা মরিচে গিনেস রেকর্ডের ঝাল
**তবু থেকে যায় সাতরঙা চায়ের রহস্য
**রাতদুপুরে সবুজবোড়ার রাস্তা পারাপারের দুঃখ
**পর্যটকবান্ধব নয় সিলেট-শ্রীমঙ্গলের ট্রেন
**চুলা নেই পূর্বাঞ্চলের কোনো ট্রেনের ক্যান্টিনে
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘন্টা, জুলাই ১৮, ২০১৬
এএ/টিআই