রাঙামাটি থেকে: সবুজ পাহাড় আর সুন্দর স্বচ্ছ লেকের লেকের শহর রাঙামাটির অন্যতম আকর্ষণ কাপ্তাই লেকে নৌভ্রমণ। কিন্তু পর্যটকরা যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন, সেটি বোট ভাড়া।
সরেজমিন দেখা যায়, কাপ্তাই লেককেন্দ্রিক ভ্রমণ ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণ করতে হলে যেত হয় রিজার্ভবাজার, তবলছড়ি অথবা পর্যটন ঘাটে। শেষটিতে ভাড়া বেঁধে দেওয়া আছে। টাঙানো আছে তালিকা। তবু ঠকছেন কিংবা ঠকানো হচ্ছে পর্যটকদের।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা সিস্টেম না জানায় এসেই কোনো কিছু না বুঝে দরদাম শুরু করেন। তখন অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সে সুযোগ নেয়। আবার অনেকসময় কয়েকটি স্পট ঘুরে দেখানোর কথা থাকলেও সময় কম কিংবা কোনো ভয় দেখিয়ে সব স্পটে নেওয়া হয় না।
পর্যটন ঘাটে গিয়ে জানা যায়, এখানে বিভিন্ন আকৃতি ও ধারণক্ষমতার বোট আছে প্রায় ১০০টি। মালিকপক্ষ ১৩ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছেন দুই বছরের জন্য। তাদের রয়েছে টিকিট সিস্টেম। চাইলে রিজার্ভ ছাড়াও ভ্রমণ সম্ভব।
ইজারাদারদের একজন আলমগীর টিকিট বিক্রি করতে করতেই জানালেন এসব। কাউন্টারেই একদল পর্যটকের সঙ্গে একখানের কথা বলে আরেক জায়গায় নামিয়ে দেওয়া নিয়ে তখন কথা কাটাকাটি চলছিলো। অবশ্য দু’জনই তাদের নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলেন।
তালিকা দেখে আলমগীর জানান ছয়টি প্যাকেজের কথা।
প্যাকেজ-১: সাত পয়েন্ট: সুভলং ঝরনা, আদিবাসী গ্রাম,শুভলং আর্মি ক্যাম্প, পেদা টিং টিং, চাংপাং, গরবা ও মেজাং রেস্টুরেন্ট। কাঠবডি ৬ আসনের নৌকায় ৬ ঘণ্টার ভাড়া ১৯৫০ টাকা
প্যাকেজ-২: ১০ পয়েন্ট: সুভলং ঝরনা, আদিবাসী গ্রাম,শুভলং আর্মি ক্যাম্প, পেদা টিং টিং, চাংপাং, গরবা, টুকটুক ইকো ভিলেজ, স্বর্গছড়া ও মেজাং রেস্টুরেন্ট। ভাড়া আড়াই হাজার টাকা। সময় ৬-৭ ঘণ্টা।
প্যাকেজ-৩: তিন পয়েন্ট: সুভলং ঝরনা,চাংপাং ও গরবা। ৪ ঘণ্টায় ভাড়া ১৪শ টাকা।
প্যাকেজ-৪: পাঁচ পয়েন্ট: সুভলং ঝরনা, পেদা টিং টিং, চাংপাং, গরবা ও রাজবাড়ি। ভাড়া ১৯৫০ টাকা। সময় ৫ ঘণ্টা।
প্যাকেজ-৫: পাঁচ পয়েন্ট: পেদা টিং টিং, চাংপাং, মেজাং, টুক টুক ইকো ভিলেজ ও রাজবাড়ি। ভাড়া ১৯৫০ টাকা। সময় ৫ ঘণ্টা।
প্যাকেজ-৫: পাঁচ পয়েন্ট: পেদা টিং টিং, চাংপাং ও টুক টুক ইকো ভিলেজ। ভাড়া ১০৫০ টাকা। সময় ৩ ঘণ্টা। এছাড়া ইঞ্জিনচালিত যেকোনো নৌকা ঘণ্টাপ্রতি ভাড়া সাড়ে ৩শ টাকা।
এগুলো খেয়াল করে চললে ঠকার সম্ভাবনা নেই। তবে লোকসংখ্যা বেশি হলে কিংবা বড় বোট হলে ভাড়া বেশি পড়ে। রিজার্ভ বাজার ও তবলছড়ির সঙ্গে এই ভাড়ার পার্থক্য একেবারেই সামান্য।
এছাড়া কেউ যদি বৈঠাচালিত সাম্পান নৌকা চড়ে পাহাড়ের কোলে নীল জলরাশির কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য কিংবা বালুখালির আদিবাসী পাড়ায় যেতে চান তাহলে ঘণ্টা নেবে দুই থেকে আড়াইশো টাকা। এর বেশি নয়। কেউ বেশি দাবি করলে জেলা প্রশাসনকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
ভাড়া বেশি চাইলে যে কেউ তালিকা দেখতে চাইতে পারবেন।
বিষয়গুলো খেয়াল রেখে যদি কোনো পর্যটক রাঙামাটি ভ্রমণে আসেন তাহলে ঠকার সম্ভাবনা নেই।
**বিকেলটা কাটুক হেরিটেজ পার্কে
**দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বুদ্ধমূর্তির দেশে
**পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার ‘সিস্টেমে’
**বাঁশের ভেতর মুরগি, পদের নাম ব্যাম্বো চিকেন
**পাহাড়ের সবুজ মাল্টায় দেশজুড়ে বিপ্লব
বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
এএ