চিম্বুক পাহাড় (বান্দরবান) ঘুরে: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ঠিক কতটুকু উঁচু হলে কঠিন শিলাস্তুপকে পাহাড় বলা চলে, তা নিয়ে নানা বিতর্ক থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশের মতো সমতলভূমির দেশে ২ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়চূড়াকে বড় পাহাড় হিসেবেই মেনে নিতে হয়।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় সেই বড় পাহাড়গুলোর একটি। বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক পাহাড় যাতে চুম্বকের মতো পযর্টক টানতে পারে, সে জন্য্য বান্দরবান জেলা প্রশাসন নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এগিয়ে চলছে বাস্তবায়নের কাজও।
বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-থানাচি সড়কের পাশে এটির অবস্থান। ১৫শ’ ফুট উচুঁ পাহাড়ি সড়ক থেকে আরো প্রায় ৫শ’ ফুট উপরে ওঠার পর অনিন্দ্যসুন্দর পাহাড়চূড়া চিম্বুকে পৌঁছা যায়।
পযর্টন ও পযর্টকবান্ধব বান্দরবান জেলা প্রশাসন পযর্টক আকৃষ্ট করার জন্য চিম্বুকে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইতোপূর্বে বানানো রেস্ট হাউজ ধুয়ে-মুছে সাফ করে সর্বসাধারণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।
নতুন স্থাপনা তৈরির কাজও এগিয়ে চলছে দ্রুত। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) চিম্বুক চূড়ায় গিয়ে দেখা যায় রাজমিস্ত্রিরা নির্মাণ কাজ চালিয়েছে যাচ্ছেন। ২ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের কার্নিসে তৈরি করা হচ্ছে বেশ কয়েকটি ভিউ পয়েন্ট। রেস্ট হাউজের সামনে বসানো হচ্ছে কংক্রিটের বেঞ্চ।
এ ছাড়া পাহাড়চূড়া কেটে-সেটে সমান্তরাল করে গাড়ি পার্কিং ও মানুষের ঘোরা-ফেরার জায়গা বের করার কাজেও হাত দিয়েছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।
পাহাড়চূড়ার সৌন্দয বৃদ্ধির জন্য ও বৃক্ষশোভিত করার জন্য এরই মধ্যে বেশ কিছু ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছ রোপন জেলা প্রশাসন। আরো গাছ রোপনের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে তাদের।
এদিকেম সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরিদর্শন বাংলো ‘গিরি চিম্বুক’ চিম্বুক পাহাড়ের সৌন্দর্ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অত্যাধুনিক নকশায় তৈরি লাটিম আকৃতির তিন তলাবিশিষ্ট এ ‘গিরি চিম্বুক’ পযর্টকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় তিন তারকা মানের চারটি বেডরুম। প্রতিতলায় একাধিক লিভিং রুম। প্রতিটা রুম থেকে কাচের জানালা দিয়ে চারপাশের পাহাড় দেখার সুযোগ রয়েছে এই গিরি চিম্বুকে। টয়লেট-বাথরুমও বিশ্বমানের। আর ফার্নিচার ও ঘর সাজানো জিনিসপত্র আভিজাত্যে ঠাসা। ফ্রন্ট ডেস্ক ও লিভিং রুমের সোফা, সেন্ট্রাল টেবিল ও জানালার পর্দাগুলো দেখে মনে হয় পাচ তারকা হোটেল এটি!
সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই বাংলোয় তৃতীয় তলায় রয়েছে উন্মুক্ত মঞ্চ। চিম্বুকের চুড়ায় উঠে পুরো বান্দরবান জেলার পাহাড় দেখার সুযোগ রয়েছে এ মঞ্চ থেকে। এখন থেকেই সূর্দয় ও সূযাস্ত দেখতে পাবেন পযর্টকরা।
গত বছর অক্টোবরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে উদ্বোধন করানো এ গিরি নিবাস চিম্বুক সর্ব সাধারণের ব্যবহারের জন্য নয়। কেবল ভিভিআইপি এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সড়ক পরিদর্শন করতে এসে আলিশান এ বাংলোয় উঠতে পারবেন।
তবে জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্মিত রেস্ট হাউজ অনুমতি পাওয়া সাপেক্ষে পযর্টকরা ব্যবহার করতে পারবেন।
এদিকে চিম্বুক পাহাড়ে পযর্টক টানতে এবং পযর্টকদের খাদ্যসেবা নিশ্চিত করতে খুব শিগগিরই ভাল মানের একটি রেস্তোরাঁ তৈরির চিন্তা-ভাবনা করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।
চিম্বুক নিয়ে আরো অনেক ইতিবাচক চিন্তার কথা তুলে ধরলেন বান্দরবান জেলার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসাইন মুহাম্মদ আল- মুজাহিদ। বাংলানিউজকে তিনি বলেন- চিম্বুক পাহাড় নিয়ে আমাদের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা আছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে চিম্বুক পাহাড় হবে বান্দরবান তথা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান পযর্টন কেন্দ্র।
** মোহম্মদীয়া হোটেলে জুরাছড়ির পর্যটন বাধা দূর!
**এটি কিন্তু জুরাছড়ি!
** হাজারছড়ায় পযর্টকের অপেক্ষায় আফিদা
** পাহাড়ে নিরুত্তাপ হরতাল
** সময় বশীভূত ইউএস বাংলায়!
** বিজিবির আতুরঘরে
** আলুটিলা রহস্যগুহায় গা ছমছমে অনুভূতি
** নীলাচলে পায়ের নিচে মেঘবালিকা
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
এজেড/এসআর