মাতামুহুরী নদী ঘুরে এসে: দূর থেকেই নৌকায় বসে নদীপাড়ের বাঁকের টিলার লম্বা গাছের মাথায় শ্বেত শুভ্র পাখির অস্ত্বিত্ত বোঝা গেল।
বাঁকের চরে গিয়ে ইঞ্জিনের নৌকা থামলেও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই গাছের মগডালে ঝাকে ঝাকে বসা পাখির।
ঢিল ছুঁড়তেই সাদা বকের দল গাছের আরাে উঁচুতে কিছুক্ষণ ওড়াওড়ি করে বসলো পাশের অন্য দুটি গাছের মগডালে।
সে এক অনিন্দ্যসুন্দর দৃশ্য। যেন বকের অভয়ারণ্য। একে বকের দ্বীপও বলা যায়।
মাত্র দেড়শ কি দুইশ হাত চওড়া শতাব্দী ধরে বয়ে চলা স্রোতস্বিনী মাতামুহুরীর বাঁকে বকের দ্বীপ দেখে মুগ্ধ না হয়ে তাই উপায় নেই। শুষ্ক মৌসুম বলে সরু যৌবনা মাতামুহুরীর দুই কূলেও জেগেছে চর। লামার মইভার পর্বত থেকে নেমে আসা অনন্ত যৌবনা এ নদীর বালুচরে দেখা মিললো দু একটি দলছুট বকের।
২৮৭ কিলোমিটার পাহাড়ি ও পাথুরে পথ পাড়ি দিয়ে আসা মাতামুহুরীর সরু প্রবাহধারা কোথাও দুই পাশে পাহাড়ের মাঝ দিয়ে গিয়েছে।
কোথাও একপাশে খাড়া পাললিক শিলার পাহাড়, অপর পাশে ক্রমশ উচু হয়ে ওঠা ঢালু চর। কিছু দূর পরপরই মাতামুহুরী নিয়েছে হঠাৎ বাঁক। এমনি এক বাঁকে অবস্থিত বক দ্বীপ।
জায়গাটার নাম বাবু পাড়া। বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার আলীকদম মাতামুহুরী ব্রিজঘাট থেকে ৪/৫ কিমি দূরে বক দ্বীপ।
দ্বীপের অদূরে জনপদ। শুষ্ক মৌসুমে টিলার নিচে নদীপাড়ের বাঁকে চর জাগলেও বর্ষাকালে টিলার অনেকটাই পানিতে ঢাকা পড়ে।
নদীর বাবু পাড়ার বাঁকের এ গাছগুলোতে এমনি প্রায় সারাবছরই সাদা বকের বাস বলে জানালেন নৌকার মাঝি সঞ্জিত দাশ।
কীভাবে যাবেন
বিখ্যাত মাতামুহুরীর প্রচার না থাকা বক দ্বীপ দেখতে চাইলে, যেতে হবে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায়। আলীকদম সেনানিবাস সংলগ্ন ব্রিজঘাট থেকে নৌকায় যাবার সময় বা বাবু পাড়া বাঁক নামতে হবে। বাঁকের কোনাতেই গাছে বকদের আবাস।
তবে ব্রিজঘাট থেকে যাবার আগে অবশ্যই সেনানিবাস গেট থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা, প্রয়োজনে অনুমতি নিতে হবে।
আর মাতামুহুরী ভ্রমণকালে সঙ্গে রাখতে তবে জাতীয় পরিচয়পত্র।
আরও পড়ুন-
** নিরবধি বয়ে চলা 'শৈল প্রপাত'
** দ্য ওয়াটার ল্যান্ড অব রাঙামাটি
** পানির রাজ্যে পাহাড়ের বুদ্ধ...
** প্রশান্তি বিলাতে কাপ্তাইয়ের ‘রিভার ভিউ পিকনিক স্পট’
** দেশের যে শহরে রিকশা নেই!
** খাগড়াছড়ির প্রবারণা উৎসবে…
** 'জিরাফ গলার' ঝুলন্ত সেতুর আকর্ষণও কম নয়
** রেল স্টেশনে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি
** রাবার ড্যামে চেঙ্গী নদীপাড়ের কৃষকদের সুদিন
বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৬
এসআর/এজেড