কেওক্রাডং (বান্দরবান) ঘুরে: দেশের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত স্বাদু পানির হ্রদ ‘বগালেক’-এ রাত্রিযাপনের পর আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ‘কেওক্রাডং’। শীর্ষ এ পর্বত চূড়ায় পৌঁছানোর পর হাতছানি দিচ্ছে আরো একটি ‘অভিজ্ঞতা’, তা হলো দেশের সবচেয়ে উঁচু গ্রাম ‘পাসিংপাড়া’।
পাসিংপাড়ার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দুই হাজার সাতশ’ ফুট। এতো উঁচুতে বাংলাদেশের আর কোনো গ্রাম নেই।
কথিত আছে, পাড়া প্রধান বা কারবারি পাসিং ম্রো- এর নামে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘পাসিংপাড়া’। পাড়ার বাসিন্দারা মূলত মুরং সম্প্রদায়ের।
পাসিংপাড়ার বেশিষ্ট্য হলো- আপনি ঘরের সামনে বা মাচার উপর দাঁড়িয়ে স্পর্শ করতে পারবেন মেঘ। চাইলে হা করে গিলে নিয়ে নিমিষেই ভেতরটা শীতলও করতে পারবেন!
শুধু তাই নয়, পাসিংপাড়ায় মেঘ আপনার চারপাশ দিয়ে খেলা করবে, উড়ে বেড়াবে যখন-তখন। হাতের কাছে এসে জড়িয়ে ধরে টেনে নিয়ে যাবে তাদের দলে। ভাসিয়ে নিয়ে যাবে মেঘের ভেলায়। সবকিছু মিলিয়ে যেন মেঘের উপর ভেসে থাকা এক গ্রামের নাম পাসিংপাড়া।
পাড়ায় ৫০-৬০টি মুরং পরিবারের বসবাস। মূলত জুম চাষ তাদের প্রধান অর্থনীতির যোগান। ঘরের বেড়ায় বাঁশের আধিক্য থাকলেও ছাউনিতে রয়েছে টিন।
সম্প্রতি একটি ঘটনায় পাসিংপাড়ায় প্রবেশে পর্যটকদের উপর সাময়িক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে শিগগিরই পর্যটকরা সেখানে ফের প্রবেশ করতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
বান্দরবান শহর থেকে অটোযোগে পৌঁছাতে পারেন রুমা বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে রুমা বাজারের উদ্দেশে দু-তিনটি পরিবহনের বাস সময় ধরে ছেড়ে যায়। রুমা ১ নং সদরঘাটে বাস থেকে নেমে সোজা হাঁটলে পড়বে বড়শিপাড়া। সেখান থেকে চান্দের গাড়িতে ১১ মাইল (এলাকার নাম)। এরপর তিন ঘণ্টার ট্রেকিংয়ে পৌঁছাবেন বগালেক। এপথেই আপনি শীর্ষ চূড়া কেওক্রাডং পৌঁছানোর পর একই রাস্তা ধরে সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাড অতিক্রম করে দেশের সবচেয়ে উঁচু গ্রাম পাসিংপাড়ায় যেতে হবে।
আরও পড়ুন-
** লাইসিয়াম বমের হাতে একদিনে শীতের চাদর
** বগালেকে রাতে অ্যাডভেঞ্চারাস ট্রেকিং
** শিক্ষক থেকে পর্যটনের অগ্রদূত একজন সিয়াম দিদি
** পাহাড়িদের পছন্দ ‘হাঙর শুটকি’
** ঠোঁট লাল করা পাহাড়ি ‘ছোট পান’
** ব্রিজের সঙ্গে পর্যটন ডুবেছে কাপ্তাই লেকে
** ‘রিছাংবান্ধব’ নন পর্যটকরা!
** রিছাং রোমাঞ্চ!
** মেঘের ভেলায় ভেসে মেঘ-পাহাড়ের দেশে
** ঝালেই পাহাড়িদের পছন্দ ‘সুমরিচ’
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৬
জেডএস/এসএইচ