সুন্দরবন থেকে: চারদিকে নোনা জল, এর ভেতর বন- এর নাম সুন্দরবন। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন।
সুন্দরবনের একাংশ থেকে অন্য অংশে যেতে জলপথই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সুন্দর এ বন ঘিরে অনেক অপরাধ সংঘটিত হয়। দাগী আসামিরা সাজার হাত থেকে বাঁচতে আশ্রয় নেন সুন্দরবনে। বনের কাঠ চুরি করে নিয়ে যায় বনদস্যুরা। হরিণ শিকার করে চোরা শিকারি।
বিশাল ও দুর্গম এ বন রক্ষার কাজে নিয়োজিত বনবিভাগ, কোস্ট গার্ড, নেভাল, র্যাব ও পুলিশ। দুর্গম বনাঞ্চল রক্ষায় বনবিভাগের যেসব রক্ষী দায়িত্ব পালন করেন, তাদের জীবনই এখানে অরক্ষিত।
সুন্দরবনে দায়িত্ব পালনকারী কোস্টগার্ড, নেভাল ও র্যাব যেসব জলযান ব্যবহার করে তা অত্যাধুনিক। তাদের তেলের বরাদ্দও প্রতুল। কিন্তু বনবিভাগের জলযান তেমন নেই। আর যা রয়েছে তাও তেলের অভাবে সবসময় চালানো যায় না।
ফলে যেসব বনরক্ষী গভীর বনে দায়িত্ব পালন করেন, তারা সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে লোকালয়ে এনে চিকিৎসা করাটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। জেলেদের মাছ ধরা ট্রলারের অপেক্ষায় থাকতে হয় লোকালয়ে এসে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। আবার কখনও কখনও তাদের খাবারও শেষ হয়ে যায়। তখন জেলেদের কাছে থেকে খাবার নিয়ে তাদের বেঁচে থাকতে হয়। সময়মতো খাবার আনা সময়সাপেক্ষও বটে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন ম্যানেজার মো. আলাউদ্দিন তার অফিসে বসে বাংলানিউজের সামনে এমনই চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সুন্দরবনের অপরাধ আগের তুলনায় খুবই কম। অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও স্মার্ট পেট্রোলিংক টিম গঠন করে ২৪ ঘণ্টা বন পাহারা দেওয়া হচ্ছে। ফলে বনকেন্দ্রিক অপরাধ এখন আর তেমন নেই।
কিন্তু বন যারা পাহারা দিচ্ছেন সেই বনরক্ষীরাই অরক্ষিত। গভীর বন থেকে তাদের যাতায়াতের নেই তেমন কোনো ব্যবস্থা। তারা চিকিৎসাসুবিধা বঞ্চিত। হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেওয়ার নেই কোনো ব্যবস্থা। এসময় হাসপাতালে নেওয়ার জন্য জেলেদের মাছ ধরা ট্রলারের অপেক্ষায় থাকতে হয়।
আলাউদ্দিন আরও বলেন, বনরক্ষীদের ২৪ ঘণ্টা ডিউটি। অন্যদের ঝুঁকি ভাতা থাকলেও তাদের কোনো ঝুঁকিভাতা নেই। সব মিলিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে বনরক্ষীদের।
** মংলা হতে পারে সুন্দরবন ভ্রমণের প্রবেশদ্বার (ভিডিও)
** গাইড থেকে ট্যুর অপারেটর
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
এমআই/এসএনএস/এএ