ঢাকা: রাজধানীর ফার্মগেট পুলিশ বক্স মোড় হয়ে খামারবাড়ির দিকে মিনিট দু’য়েক হাঁটতেই আম, কাঁঠালসহ হরেক রকম ফলের মৌ মৌ গন্ধে মন ভরে যাবে। ডান দিকে তাকাতেই চোখে পড়বে ফল প্রদর্শনীর চিত্র।
প্রদর্শনীর ভেতর প্রবেশ করলে চোখ আটকে যাবে নানা জাতের ফল দিয়ে সাজানো ‘ফলের পিরামিড’ দেখে। পরিচিত হওয়া যাবে ৫০ জাতের আমসহ প্রায় ১৩০ রকমের প্রচলিত-অপ্রচলিত বৈচিত্র্যময় ফলের সঙ্গে।
কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিনদিনব্যাপী এ জাতীয় ফল প্রদর্শনীতে ফলের সমারোহে হারিয়ে যাবেন যে কেউ।
শুক্রবার (১৭ জুন) ফল প্রদর্শনী প্রাঙ্গণ ঘুরে উঠে আসে প্রদর্শনী স্থানের এমনসব দৃশ্য।
ফলের মৌসুমে শুধু ফল দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন, তা কি হয়। তাই তো গাছ থেকে সংগ্রহ করা নানা জাতের আম, কাঁঠাল, কলা, জামরুল, আনারসসহ বিভিন্ন ফল কেনার সুযোগও পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
এর পাশাপাশি কেউ যদি ফলের বাগান বা গাছ লাগাতে চান সেই পরামর্শও মিলছে প্রদর্শনী প্রাঙ্গণ থেকে। পুরো প্রাঙ্গণ ফলের গন্ধে ভরে আছে। এমন আয়োজন দর্শনার্থীরাও মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করছেন।
জাতীয় ফল মেলার প্রধান ফটক পার হলেই বাম পাশে রয়েছে চেনা অচেনা বিভিন্ন ফলের ছবি, নামসহ নানান দিকনির্দেশনা। দুই-তিন ধাপ হাঁটলেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্যাভেলিয়নে দেখা যাবে নানা প্রজাতির আমের প্রদর্শনী।
আর এর সামনে রয়েছে আম, কাঁঠাল, আনারস, জামরুল, নারিকেল, কলা, তরমুজ, খেজুরসহ নানা জাতের ফল দিয়ে সাজানো ফলের পিরামিড। নয়নাভিরম এই পিরামিডকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীদেরও ভিড় দেখা গেলো। অনেকেই এর সঙ্গে ফ্রেমে ছবির বন্দিও হচ্ছেন।
প্রদর্শনীতে বিদেশে ফল রফতানিকারকদের জন্যও রয়েছে নানা তথ্য ও দিকনির্দেশনা। হটেক্স ফাউন্ডেশন ও কৃষি বিপণন অধিদফতরের স্টলে কিভাবে রফতানিযোগ্য পণ্য প্যাকেটজাত করতে হয় তার ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়া কেউ যদি এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান সে ব্যবস্থাও রয়েছে।
ফলের সঙ্গে বেসরকারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের একটি উন্নত সম্পর্ক রয়েছে তারও চিত্র দেখা মিলবে। বাগান থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন ফল দর্শনার্থীদের কাছে তারা তুলে ধরছেন। যে কেউ চাইলে ব্যাগ ভর্তি কিনেও নিয়ে যেতে পারেন।
বাড়ির ছাদে বা টবে বিভিন্ন ফলের চাষ করা যায় তার নমুনাও রয়েছে প্রদর্শনী প্রাঙ্গণে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে দেওয়া হচ্ছে পরামর্শ। এছাড়া দর্শনার্থীদের কাছেও উপস্থাপন করা হচ্ছে।
প্রায় এক কেজির কাছাকাছি আম দেখে অবাক বনে যান মিরপুর থেকে আসা দর্শনার্থী আকবর হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় না এলে বোঝা যেতো না এতো রকমের ফল দেশে চাষ হচ্ছে। সত্যিই ব্রুনাই জাতের এ আম দেখে প্রথমে আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি।
বেসরকারি আমের স্টলগুলোতেও আম কিনতে বেশ ভিড় দেখা গেলো। দর্শনার্থী থেকে ক্রেতা বনে যাওয়া সবাই জানালেন, বিভিন্ন ফলের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি বাড়িতে নিয়েও যেতে পারা যাচ্ছে। এ অর্থে এটি খুবই ভালো আয়োজন।
অনেকেই পরিবার নিয়ে ছুটির দিনে হাজির হয়েছেন প্রদর্শনী প্রাঙ্গণে। পরিবারের ছোট সদস্যরাতো নতুন নতুন ফল দেখে নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার নিজের বাড়িতে পছন্দের ফলের গাছ লাগানোর বায়নাও ধরছে।
তিনদিনব্যাপী জাতীয় ফল প্রদর্শনী উৎসব শনিবার শেষ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৬
একে/এসএইচ