ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সেলিম আল দীন তার কর্মে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩
সেলিম আল দীন তার কর্মে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল

ফেনী: নাট্যচার্য সেলিম আল দীনের ১৫তম প্রয়াণ দিবসে স্মরণ সভায় বক্তারা বলেছেন, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছেন সেলিম আল দীন। তিনি নাটকের আঙ্গিক ও ভাষার ওপর গবেষণা করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।

বাংলা নাটকের শিকড় সন্ধানী এ নাট্যকার ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের বিষয় ও আঙ্গিক নিজ নাট্যে প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলা নাটকের আপন বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছেন। নাটকে তিনি বলেছেন, মানুষের কোনো আলাদা পরিচয় ও ঠিকানা নেই। এ পরিচয় ও ঠিকানা না থাকলে তার জাতও থাকে না। নাট্যাচার্য তার কর্মে বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।

নাট্যচার্য সেলিম আল দীনের ১৫তম প্রয়াণ দিবসে স্মরণ সভার আয়োজন করেছে সেলিম আল দীন চর্চা কেন্দ্র ফেনী।  

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আর্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মিলনায়তন কক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সেলিম আল দীন চর্চা কেন্দ্র ফেনীর সাধারণ সম্পাদক রাজীব সারওয়ার।

নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন চর্চা কেন্দ্র ফেনী জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক শামীমের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় অতিথির বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ফেনী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সমর দেবনাথ, ফেনী থিয়েটারের সাবেক প্রধান সমন্বয়কারী নাট্য ব্যক্তিত্ব কাজী ইকবাল আহমেদ পরান।

স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহকারী সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা তাহমিনা তোফা সীমা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলমগীর মাসুদ, সোনাগাজী শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রহমান সুজন, যুগ্ম আহ্বায়ক আক্রামুল হক সোহাগ, লেখক আব্দুস সালাম ফরায়েজী, কবি ও লেখক ইমরান ইমন প্রমুখ।

স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল আমিন রিজভী, অর্থ সম্পাদক ফজলুল হক রনি, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, দপ্তর সম্পাদক সুরঞ্জিত নাগ, নির্বাহী সদস্য দীপঙ্কর শীলসহ সংগঠনের সদস্যরা।  

নাট্যকারের জীবনী থেকে জানা যায়, নাট্যকার সেলিম আল দীনের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট, ফেনী জেলার সোনাগাজীতে। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের তৃতীয় সন্তান। বাবা ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। সেই সূত্রে ঘুরেছেন বহু জায়গায়।

লেখক হবেন এমন স্বপ্ন তিনি ছেলেবেলা থেকেই দেখেছেন। এ বিষয়ে তিনি পাকা সিদ্ধান্ত নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর। লেখক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে। সে বছর কৃষ্ণাঙ্গদের নিয়ে তার একটি প্রবন্ধ দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই তিনি নাটকে জড়িয়ে পড়েন, যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠা সেলিম আল দীনের হাত ধরেই। ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সেলিম আল দীন ১৯৮১-৮২ সালে নাট্য নির্দেশক নাসির উদ্দিন ইউসুফকে সাথী করে গড়ে তোলেন গ্রাম থিয়েটার।

সেলিম আল দীন ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। ২০০২ সালে পান কথাসাহিত্য পুরস্কার। ১৯৯৪ সালে তিনি নান্দিকার পুরস্কার পান। ১৯৯৪ সালে শ্রেষ্ঠ টেলিভিশন নাটক রচয়িতার পুরস্কার পান। এছাড়া ১৯৯৪ সালে তিনি পান শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০০১ সালে পান খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার। সেলিম আল দীন ২০০৭ সালে একুশে পদক পান। ১৯৯৫ সালে তিনি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে নাটক এর ওপর গবেষণা করে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন বাংলা নাটকের কালপুরুষ সেলিম আল দীন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ 
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।