ঢাকা: সক্ষম সমাজের জন্য সংস্কৃতি চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আজকাল তরুণদের মধ্যে সংস্কৃতিচর্চা কমে গেছে, যা তরুণ-যুবকদের বিপথগামী করছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শান্তিনগরে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত নাট্যানুষ্ঠান-পূর্ব আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটক তৎকালীন পাকিস্তানের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধ প্রথম প্রতিবাদ। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি জেলে বসেই নাটকটি রচনা করেছিলেন। পরাধীন দেশে যতবার এর মঞ্চায়ন হয়েছে, ততবারই এ দেশের মানুষ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মন্ত্রে উদ্দীপ্ত হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী বলেন, মহান ভাষাশহীদদের স্মরণে রচিত কবর নাটক তরুণ প্রজন্মকে দেশপ্রেমের মন্ত্রে উদ্দীপ্ত করবে।
তিনি বলেন, সক্ষম সমাজের জন্য সংস্কৃতিচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আজকাল তরুণদের মধ্যে সংস্কৃতিচর্চা কমে গেছে, যা দেশপ্রেমের দীক্ষাহীন অপসংস্কৃতির দিকে ঠেলে দিচ্ছ, তরুণ-যুবকদের বিপথগামী করছে। ‘কবর’ নাটক তরুণদের ঐতিহ্যের দিশা দেবে।
নাট্যকার বৃন্দাবন দাশ বলেন, কবর নাটকের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ-বপন হয়েছিল। প্রতিবাদের ধারাবাহিকতায় ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের অসহযোগ আন্দোলন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
তিনি বলেন, ‘কবর’ নাটক বাঙালি মানস তৈরিতে ভূমিকা রেখেছিল। পাকিস্তানিদের শোষণ-বঞ্চনার বিপরীতে বাঙালি জাতিকে শাণিত করতে যে মন্ত্র উজ্জীবিত করেছিল, এ নাটক ছিল তার প্রারম্ভিকা, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেয়েছিল। কিন্তু বিজয়ের প্রাক্কালে এ নাট্যকারকে জীবন দিয়ে নাটকের মূল্য মেটাতে হয়েছিল।
কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য অভিনেতা ফজলুল হক বাবু বলেন, যারা নাটক করেন তারা মঞ্চকে প্রার্থনাস্থল মনে করেন। নাটক যদি হয় মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’, তাহলে সে নাটক হবে মহান ভাষা আন্দোলনের পক্ষে নাটকের মাধ্যমে প্রথম উচ্চারণ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওয়াসিউল মাসুম ও কলেজের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
জেডএ/আরএইচ