ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

দুটি কবিতা | অনিন্দ্য নূর

কবিতা / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
দুটি কবিতা | অনিন্দ্য নূর

আর্তধ্বনি
___________________________________

      পৃথিবী, ক্ষ্যাপা ঘড়িটা থামিয়ে দাও
      বিধ্বস্ত করে দাও নক্ষত্রের চোরাবালি।
      আমি পাঁজরে ঐশ্বরিক রাত্রি জড়িয়ে রেখেছি
      দু’হাতে চেপে ধরেছি ঈশ্বরের লাল হাত।


      কী করে নিঃশেষ করে দিতে চাও
      আমার শরীরে মৃত্তিকার কুণ্ডলী?
      একে তো মেরুদণ্ডে বহন করে চলছি
      হিংসা, লোভ, জরা আর মরণের নীল খাম।
      রক্তাক্ত মুষ্টির শপথে দু’বাহু ফুঁসে ওঠে
      ফণিমনসার নাগিনী, ক্লান্ত পা হেঁটে হেঁটে
      পথ হারাবে না অন্তিম অমাবস্যায়
               যেখানে জমা আছে সমস্ত নিপীড়িত কঙাল।

      আমার প্রাণের দীক্ষা আদিম মহাকালের ইতিহাস
      কান পেতে শোনো পশ্চাত দ্বার হতে চিৎকার
      আসে ঈশ্বরের মুখোমুখি দাঁড়াবার—সে আমার
      রক্ত, পৌরুষ, তাদের বিগত নিঃশ্বাসে বৃক্ষরা
      দাঁড়াতে শুরু করছে নির্যাতিত মৃত্তিকার বক্ষে।
      নিশুতি রাত্রির বিহঙ্গেরা মানুষের অন্দরে ঝড়ের
      বেগে আসছে—কুৎসিত ডানায় মৃত্যুর ঘ্রাণ নিয়ে।


অনন্ত বেদনা
___________________________________

      আমি ঊর্ধ্বমুখী এক কৃষ্ণপক্ষকে দেখে চলছি
      সে আমার অনন্ত নিবাস, হাজার বছরের
      অসীম বক্ষের বেদনা, অথবা ক্লান্তিহীন মহামন্ত্র।
      কালো গহ্বরের পথে সুধায়—এসো হে মোর
      দুর্ভগ সারথী, মহামন্দিরের নীলিমা দ্বার হতে ঢের
      ভেসে আসছে, গরল সঙ্গীত অথবা ব্যাঘ্র অট্টহাসি।
      ভীতু আয়ুরেখা আর কণ্ঠস্বর হারিয়ে যায়
      ধুলো ভরা পথে পথে—যে পথ মিশে গেছে মরণের পথে।
      প্রার্থনারত আমার দু’হাত, আর নিষ্ঠুর পথচিহ্ন
      আঁকা বিক্ষত মহাকালের পারে।
      অস্থির হৃৎপিণ্ড থেকে শ্বাস দ্রুত শুষে নিচ্ছে
      অনন্তের বাতাস, আদিগন্ত থেকে আদিগন্তে।



বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।