ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

একজোড়া কবিতা | মারজুক রবীন

কবিতা ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৫
একজোড়া কবিতা | মারজুক রবীন

খালাশীর শব্দে

ছায়া হয়ে হাঁটি আজন্ম ছায়ার অন্ধকারে,
দুপুরের রোদ সন্ধ্যায় হয় ছায়াগ্রাম

বোধের দেয়ালে চেনা প্রতিধ্বনিরা
ডেকে চলছে মুহুর্মুহু। ভোরের রোদ আর
দুপুরের শ্যাওলায় বিকেল এসে জানায়,
মৌনতা মূলত পাখির নাম।

দূ-রে
সন্ধ্যায় ছায়াবাগানের বাতিঘর হলুদ
আলো ফেলে সমুদ্রে—

আর...
মুহূর্তেই মৌনতার পলি বুকে নিয়ে
ঘুমিয়ে পড়া হলুদ কাঁকড়া ডেকে যায়
খালাশীর শব্দে... দূ-রে...

বেহুলাবাংলা কবে এসেছিল
এখানে রাইন নদী হয়ে
সেই গল্প ভুলে যাই
পাখির পালকের ছায়ায়—গাঢ় হয়
রাতের ঘ্রাণ;

আহ ঘুম—

ঘোর নির্লিপ্ততায় খোলস বদলায় যে
পথ—পথের বাঁকেই আজন্ম এই আমাদের
ছুটে চলা;
ফুঁ দিলেই একটা জীবন

যে ছায়া ছায়াপথ হবে, হঠাৎ সে হয়ে
গেল পাথর চোখ। আর ঝুম ঝুম করে
বলিরেখা পড়ল কর্নিয়ায়—
দীর্ঘ হলো ঘুম


কথা হয়ে যায়

সন্ধ্যায় চিলের রঙ বদলায়,
বর্ণচোরা আকাশে বেসামাল
অন্ধকার...

যাদের সন্ধ্যায় ফেরার কথা ছিল
তারা ফিরেছে সবাই, আর যারা
ফেরেনি, গুম হয়ে গেছে অথবা
দেয়ালের ফটোগ্রাফ;
সব নদী তো ফেরে না,
বদলানো বাঁকে
বালিয়াড়িতে
রেখে যায় কেউ
সিঁথানের ঝরা চুল, সরীসৃপ
দাগ, আর কিছু জোছনাফল

আজ যারা ফিরেছে এক এক করে
সবাই যাচ্ছে নদী উৎসবে!
কোন এক নদী আজ নারী হবে,
সন্ধ্যার অন্ধকার কেটে
এবার বুঝি নামল হলুদ রোদ্দুর
এইভাবে, জুয়ার পাহাড় থেকে
পিছলে পড়েছে কথা

৭০৩ বছর পর কথা গাছে ফল এলো

সেই যে, বুকপকেটে
কথা ফল জমাতে গিয়ে
কবে বিলীন হয়ে গেছি নদী গর্ভে

জীবনের দামে কেনা
ঝরাচুল, জোছনা ফল, সরীসৃপ দাগ
কবে যে হারিয়ে যায় কথার
মগডালে...

ঘুমের চোখের পাতায়
সেই ছোট্ট অন্ধকারে ডুবসাঁতার কেটে
চলছে সেই গল্প।
হয়ত জানা যাবে, অথবা
একেবারেই জানা যাবে না
এই নদী একদিন তুমি ছিলে!

প্রতিসন্ধ্যায় যে চিল উড়ে যায়
কথা হয়ে যায়



বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।