১.
তোমাদের নিঝুম প্রেম থেকে দূরে
যেখানে নিবিড় আরাম ডাকে প্রাণের মায়ায়
ক্ষণকাল আকাল পেরিয়ে গড়েছি নিয়মের সংসার
তরুণ তীর্থের পথে ধ্যানের সুরভি মেখে হাঁটি
খুঁজি পঞ্চবটির বিস্তৃত শাখা প্রশাখা—বিবেকানন্দ প্রেম।
আমি ব্রহ্মচারী নই—শুধু বিবিধ বেদনায় হয়েছি আকুল নরম
আশ্রমের প্রতিটি দেয়ালে লিখে যাই জীবনের নিবিষ্ট সূত্রমালা
জপমালায় ভরসা নেই—শুধু বিধানের নিয়ম ভেঙে গড়ি বিপুল পৃথিবী।
মানসিক সূত্রের বিন্যাসে লাগে অসীমের ঢেউ
দুলে ওঠে পাল হয়ে বেসামাল নমিত নৌকায় লাগে দোলা
মানে-অপমানে, শত্রু-মিত্রে, শোকে আর সুখের ব্যবধান যায় গুছে।
২.
পাহাড়ের আনত বাধা পেরিয়ে মেঘের কাছাকাছি
ওখানে কোনো যোগী নেই—মানুষ বড়বেশি গৃহস্থ মায়ায়
লুকিয়ে রেখেছে সমূহ সন্ন্যাস আর নিয়মের উপাচার
দেখা হলো এক জোড়া কাঠবিড়ালির সাথে
যারা গত জন্মে সাধুর ভান ধরে নিয়েছিল গৃহস্থ কামনা
এখানে মেঘের ভাসমান জল ছাড়া কিছু নেই
যারা এসেছে পৌরাণিক প্রতীকের কাছে চন্দ্রনাথ চূড়ায়
তারাও পুণ্যের জলে ডুবে যাবার আগে ভাবে
কোনো রত্নাকরের দস্যুপনার কথিত গল্পের ছবি।
পাপ আর পুণ্য কোনোটাই টানেনি তেমন
শুধু ডুবে গেছি বিবিধ বৃক্ষের ছোঁয়ায়
অবিন্যস্ত সিঁড়ি-পথের প্রতিটি পাথরের কাছে
রেখে আসি কিছু অব্যক্ত ঘাম আর সুতীব্র নিশ্বাস।
শিউলি বিছানো পথের মায়ায় পেয়েছি স্বর্গীয় আমেজ
এসবের মাঝে গড়েছি কামে প্রেমে বাঞ্ছাকল্পতরু।
৩.
মানুষ জানে ভালো
জীবনে কতটা আলো ছড়াতে হয়
কথার মায়ায় বেঁধেছিল যে বোষ্টমী
তাকে আজ আর কোথাও দেখি না
পথিক শুধু পথের ইশারায় হেঁটেছে সুদূর।
৪.
হাতে বিষণ্ণ বিকেল তুলে দিয়ে কোথায় গেলে?
সব সুর মুছে নিয়ে এ কোন পথে ছুঁড়ে দিলে মোহের বেলুন
অথচ তোমার চোখের স্বপ্নে বানিয়েছি সুরম্য ভুবন।
শীতের রোদ বুকে মেখে তোমাকে করেছি নমিত রমণী
চঞ্চল পাখি ওড়ে
ঘুরে ঘুরে বাড়ে নতুন সকাল।
গন্ধরাজের মাতাল সাহসে বিভোর দিন দোলে নীরবে
ঝরা পাতার সাথে উড়ে গেছি দূরে
শুধু ভুল করে কী রেখে গেছি জানা নেই!
এখনো এক হাতে বিষণ্ণ বিকেল
অন্য হাতে অচেনা জীবন!
৫.
এসেছো আবার ফিরে
মানুষের ভিড়ে!
সূর্যখোলার মেলায়
ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হলে
বটের ছায়ায় এসো
দুমুঠো সুখ নিয়ে খেলি
বিষণ্ণ পাখিদের মাঝে!
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫