তড়িত্বান
এরপর কী হবে তা জানি না।
হয়ত বেঁচে থাকবে নিভৃতে জেগে থাকা চাঁদ
কিংবা অচেনা কানাগলিতে অপ্রস্তুত আনাগোনা,
কে জানে!
হয়ত দিনের শেষে ভেঙে যাওয়া শামুকের খোল
নয়ত অধীর, কোনো উদ্বাস্তু কিংবা দাঁড়কাক হয়ে
অহেতুক ভাবনা।
তবু ভালো লাগে অনিশ্চয়তার এই তড়িত্বান।
ভেসে আসা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতন
অজস্রের মাঝেও একাকী নিস্তব্ধতা।
ত্রিতত্ববাদ
তোমাকে চাই বলে অহর্ণিশ ভালোবেসেছি।
এভাবে ভালোবাসে প্রেমে মত্ত হওয়াকে
আমি বলি ঐশ্বর্যমত্ততা, তুমি বলো ঐহিকবাদ।
হতে পারে মগ্নচৈতন্যে বিভ্রান্তি অথবা
দিনের শেষে ত্রিতত্ববাদে
এক কিংবা তিন, তিন কিংবা এক!
অনিত্য জগৎ দেখে দিকভ্রান্ত,
তাই সত্ববানে জর্জরিত পুরুষ
প্রেমিক সাজে!
তকতনামা
সুখে থাকবার অনন্ত চেষ্টায় ক্লান্ত হচ্ছি
বয়ে যাওয়া অনন্ত দীর্ঘশ্বাসের মতো,
ময়ূরী নদীর মতো।
যেন এক টেনে নেয়া তকতনামা
পরিশ্রান্ত আটটি পা,
একটি অপরটির সাথে জড়িয়ে গিয়ে
বিরহ গড়ে বিচ্ছেদের টানে।
সুখে থাকবার সকল স্বপ্ন
তাই অবিবেচনাপ্রসূত,
ধারালো নখর নিয়ে তক্কেতক্কে থাকে
বোধহয় কোনো এক অচিন পিশাচ।
সুখ খেয়ে বেঁচে থাকা
ক্রোধী, ক্লিষ্ট পিশাচের পায়ে
অগুণতি ক্লান্ত দীর্ঘশ্বাস;
নদী, গাছ, ঘাসফুল হয়ে
বয়ে চলে অগস্ত্যযাত্রায়।
তাই যতটা সুখী হই প্রতিদিন
তার চেয়ে ক্লান্ত হই ঢের বেশি,
সুখে থাকবার অবিরত চেষ্টায়
মৃতপ্রায় দীর্ঘজীবী বটের মতো।
ব্যর্থ
আমি কী হব কী হব করে
অবশেষে ব্যর্থ হলাম।
অনেক ভেবে দেখলাম
এ পথেই প্রতিদ্বন্দ্বী কম,
কাঁটাও নেই বললেই চলে!
অনিকেত বিস্ময়
এভাবে মরতে মরতে আমৃত্যু বেঁচে রব।
বৃষ্টি হবে, ঝড় হবে, কাব্য হবে;
কারো কারো প্রেমে রৌদ্র হবে অনিকেত বিস্ময়।
এভাবে প্রেমে প্রেমে ক্লান্ত হৃদয় স্নিগ্ধ হবে
মেঘ জমবে, কুয়াশায় সিক্ত হবে ঘাসের ডগা
ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধে আকুল হয়ে
আকাশ ছোঁবে পূর্ণিমার চাঁদ।
তবু কেউ ভালোবাসবে না
ফুল ফুটবে না, ফল ধরবে না, শস্য ফলবে না
পাখিরা গান গাইবে না
প্রেমগুলো অস্পৃশ্যই রবে।
এ অদ্ভুত ক্ষরাকাল
যেন ঋক্ষমণ্ডলজুড়ে বিদ্যমান, তবু অদৃশ্য।
এ পতন অনিঃশেষ
যেন এ পৃথিবীতে অনাকাঙ্ক্ষিত;
আরেকটি প্রাণের নীরব প্রস্থান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫