ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আদর্শ ও চেতনা ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘জয়নুল উৎসব ও লোকজ মেলা-২০১৬’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।
সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, শিল্পাচার্যের আদর্শ-চেতনা ধারণ করে এগিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের কাজ। যদি আমরা এগিয়ে না যেতে পারি তাহলে তাকে ঘিরে যতো আয়োজন সব অর্থহীন হয়ে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সহধর্মিনী জাহানারা আবেদিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি এদিন সকালে শিল্পাচার্যের সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে সূচনা হয়।
এসময় শিল্পাচার্যের সমাধিতে চারুকলা অনুষদের আটটি বিভাগ, অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশান, জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রতি বছরের মতো ‘জয়নুল সম্মাননা-২০১৬’ দেওয়া হয় ভারতের প্রখ্যাত শিল্পী অধ্যাপক যোগেন চৌধুরী এবং বাংলাদেশের প্রতিথযশা শিল্পী অধ্যাপক হাশেম খানকে। মোড়ক উন্মোচন করা হয় ‘জয়নুল জন্মশতবর্ষ প্রবন্ধাবলি’ বইয়ের।
সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে ঈর্ষণীয়। আর এর পেছনে একজন মানুষের অবদান অনুস্বীকার্য। শিল্পচার্য শিল্পের যে বীজ বপন করে গেছেন তা আজকে মহীরুহে পরিণত হয়েছে। শিল্পাচার্যকে শ্রদ্ধা, সম্মান ও স্মরণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সন্ত্রাসবাদকে জনগণ প্রত্যাখান করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর হত্যার মধ্য দিয়ে। গুলশানে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও শিল্পাচার্য এই বাংলাদেশ চাননি। তারা মানবের দেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। জঙ্গি হওয়ার কারণে নিজের ছেলের মরদেহ পর্যন্ত নেয়নি। এটাই আমাদের বাংলাদেশ।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একটি দেশের সঙ্গে ভৌগোলিক সীমারেখা থাকতে পারে। কিন্তু সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্পের ক্ষেত্রে কোনো সীমারেখা নেই। এজন্য আজ ভারতের শিল্পী যোগেন চৌধুরী জয়নুল সম্মননা নিয়েছেন।
ভারতের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত আমাদের মতো গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক নীতিতে বিশ্বাস করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের জনগণ, গণমাধ্যম ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে।
অনুষ্ঠানে শিল্পী তারক গড়াইয়ের নির্মিত ভাস্কর্যের আবরণ উন্মোচন করা হয়।
চারুকলা অনুষদের আটটি বিভাগের শিল্পীদের নির্মিত বিভিন্ন ধরনের জিনিস নিয়ে উদ্বোধন করা হয় জয়নুল মেলা। এছাড়া বিকেলে রয়েছে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬
এসকেবি/এএটি/এসএনএস