ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শুরু হলো বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির উৎসব

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৭
শুরু হলো বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির উৎসব গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: গ্যালারি পরিপূর্ণ দর্শকের ভিড়ে। একে একে মঞ্চে আসন গ্রহণ করলেন অতিথিরা। উপস্থিত সবাইকে নৃত্যের তালে অভিবাদন জানালেন স্পন্দনের কর্মীরা। তারপরই আলোক প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে হলো উৎসবের উদ্বোধন।

‘স্বাধীনতার পর ২১শে ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার একটা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, সংস্কৃতি অবিভাজ্য। বিশেষ করে বাঙালি সংস্কৃতি আরও বেশি।

আর সেই সংস্কৃতিকে দু’দেশের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে উৎসবের বিকল্প নেই। আর গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব তেমনই। যা বাংলাদেশ ও ভারতের সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিদের মধ্যে সংস্কৃতি ভাগাভাগি এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ’

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৭’র উদ্বোধন লগ্নে এ কথা বলেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক নাট্যজন আলী যাকের।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যজন মামুনুর রশীদ এবং রামেন্দ্র মজুমদার, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের রাজেশ উইকে, গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস ও সদস্য সচিব আখতারুজ্জামানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

উদ্বোধনী বক্তব্যে লিয়াকত আলী লাকী নাট্যকর্মীদের নতুন নাটক ও নাটকে নতুনত্ব আনার প্রতি আহ্বান জানান। দুই বাংলার সংস্কৃতিকর্মীদের একটি উৎসবে একত্রিত করার জন্য শুভেচ্ছা জানান উৎসবের আয়োজকদের।

নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, উৎসব যতটা হচ্ছে, সেই অর্থে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা দৃঢ় হয়ে ওঠেনি।  

রামেন্দ্র মজুমদার বলেন, আমাদের আগ্রহ থাকলেও রয়েছে পশ্চিমবাংলার অনিহা। তবে এই নাট্যোৎসবের মধ্য দিয়ে দু’দেশের নাট্যকর্মীরা অনুপ্রাণিত হবে।  

পাশাপাশি নিম্নমানের নাটকের পরিবর্তে মানসম্মত নাটক দেখানোর প্রতি গুরুত্ব দেন এই নাট্যবোদ্ধা।

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র ও বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) রাজেশ উইকে বলেন, এই আয়োজনে আসতে পেরে গর্বিত। সংস্কৃতির ক্যালেন্ডারে একটি বড় দাগ কাটবে। পাশাপাশি নাটকের মধ্য দিয়ে জনগণের নিজেদের মধ্যে বাড়বে যোগাযোগ। দু’দেশের নাট্যকর্মীরাই এ আয়োজনের মাধ্যমে তাদের নাট্য প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পাবে।  

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় এ আয়োজনে উৎসাহ দিয়ে আসছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। মানবিক চর্চার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চার বিকল্প নেই। মানুষে মানুষে যোগাযোগের কাজ করছে গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব।

সভাপতির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুস শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সদ্য প্রয়াত কলকাতার অনীক নাট্যদলের প্রধান নাট্যজন অমলেশ চক্রবর্তী, দ্বিজেন শর্মা ও বাংলাদেশের মতিঝিল থিয়েটারের আক্কাস মিঞার প্রতি।

১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে চলবে এ উৎসব। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হবে এ আয়োজন।  

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার হল ও স্টুডিও থিয়েটার হলে ভারতের ৩টি ও ঢাকার ২৬টিসহ মোট ২৯টি নাট্যদলের নাটক মঞ্চায়িত হবে এবারের উৎসবে। এছাড়া উৎসব প্রাঙ্গণের উন্মুক্ত মঞ্চে ৬৩টি সংগঠনের আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য ও পথনাটকের পরিবেশনা থাকছে বলেও জানায় উৎসব আয়োজক কমিটি।

উৎসবে মঞ্চনাটক, যাত্রা, নৃত্য, আবৃত্তি, সঙ্গীত, মুকাভিনয় ও পথনাটকে ভারত ও বাংলাদেশের মোট ৯২টি দল অংশ নিচ্ছে। উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক পর্ব প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত এবং মঞ্চনাটক শুরু হবে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাতটায়।

**দেশের প্রতিটি শিল্পকলায় মাসে ৭ দিন সিনেমা প্রদর্শনী

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৭
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।