ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

রূপকী ব্যঞ্জনায় গ্যালারি কায়ায় মকবুল ফিদা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
রূপকী ব্যঞ্জনায় গ্যালারি কায়ায় মকবুল ফিদা মকবুল ফিদার প্রদর্শনীতে দর্শনার্থীরা/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ঘটনা আছে, বর্ণনা আছে, আছে পরিমিতিবোধের আশ্চর্য এক যাদু। রূপের ভরকেন্দ্র লক্ষ্য করে সেখানে রেখা একটু ভেঙে আশ্চর্য সে যাদুর তুলির আঁচড়ে শিল্পী মকবুল ফিদা হুসেন গড়েছেন এক একটি ছবি। শিল্পীর সেসব চিত্রকর্ম নিয়েই উত্তরার গ্যালারি কায়ায় এডিএন এবং সুহানা ও আনিস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শুরু হলো শিল্পীর ৮ দিনব্যাপী একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী।

প্রায় শতায়ু জীবন পেয়েছিলেন তিনি। তার পুরোটাই যাপন করেছেন শিল্পী হিসেবে।

অশ্ব খুরের মুহুর্মুহু শব্দে শিহরিত হয়ে ভূভারত থেকে পৃথিবীর নানা দেশে গিয়ে এঁকেছেন ঘোড়া। সে ঘোড়ায় মজেছিলেন বিশ্ববিখ্যাত শিল্পী পিকাসো। বিচিত্র সেসব শিল্পকর্ম নিয়েই বুধবার (২৪ জানুয়ারি) শিল্পীর ১০১ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ঘণ্টা বাজিয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, উন্নত জাতি বিনির্মাণে ও চিত্রকলার চর্চায় এ ধরনের প্রদর্শনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জন্মসূত্রে ভারতীয় শিল্পী মকবুল ফিদা হোসেনের এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে তার জীবনের বিভিন্ন সময়ের ৫৯টি চিত্রকর্ম। তবে দর্শক মজেছেন শিল্পীর ঘোড়া আর মা ও শিশু সিরিজে। দুই বছর বয়সে মা হারানো এ শিল্পী তার কোনো শিল্পকর্মেই আকেঁননি মায়ের মুখ। মুখহীন এ মায়াবী অবয়ব তার ছবিতে সৃষ্টি করেছেন দারুণ এক রহস্য।

দারিদ্র্যের কারণে তরুণ দিনে যাপন করতে হয়েছিলো প্রায় বাস্তুহারা জীবন। রাস্তায় ল্যাম্পের আলোয় পড়েছেন ও এঁকেছেন অনেক। তারপর জীবিকার প্রয়োজনে সিনেমার পোস্টার আর হেডিং আঁকতে আঁকতে বুঝেছেন রেখা আর রঙের আচার আচরণে পরিস্ফুট হয় ইমেজ, চলমানতায় বিস্তৃত করতে হয় ছবির গল্প। সে গল্পই যেন কথা বলে ধ্রুপদী, বয়সের বৈচিত্র্যতা, ঘুড়ি, গঙ্গা যমুনাসহ একাধিক ছাপচিত্রের।

একাধিক দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া এ শিল্পী মৃত্যুবরণ করেন ৯৫ বছর বয়সে। এঁকেছেন মহাভারতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রও। জীবদ্দশাতেই তার ছবি স্থান পেয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় গ্যালারিতে।

ধাঁধার বাধা পেরিয়ে রূপকী ব্যঞ্জনায় শিল্পীর হাতে রংগুলো পবিত্রতা ছড়িয়েছে শিল্পে। পবিত্র সেসব শিল্পকর্মের এ প্রদর্শনী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা অবধি উন্মুক্ত সবার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।