ঢাকা: ভাস্কর্য চর্চায় উৎসাহ, বিকাশমান চর্চার সুরক্ষা ও বিস্তারে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘পঞ্চম জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী’। এ বছর পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী।
রোববার (২৮ নভেম্বর) একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব মো. আছাদুজ্জামান, চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম ও উপ-পরিচালক মোস্তাক আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার (২৯ নভেম্বর) একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বিকেল ৪টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। এছাড়া উপস্থিত থাকবেন বরেণ্য ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান ও বরেণ্য শিল্পী অলক রায়। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে ভাস্কর্য শিল্পের চর্চা ষাট বছরেরও অধিক সময় অতিক্রম করেছে। বিগত শতকের পঞ্চাশ দশকের শেষ দিকে নভেরা আহমেদের মাধ্যমে এদেশে আধুনিক ভাস্কর্য চর্চার সূচনা ঘটে। পরবর্তীতে ষাট দশকের প্রথমার্ধে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সহচর্যে শিল্পী আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ঢাকার তৎকালীন চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ভাস্কর্যের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা আরম্ভ হয়, যা বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে স্বতন্ত্র বিভাগে পরিণত হয়েছে। এর পাশাপাশি মৃৎশিল্প ও অন্যান্য শিল্প মাধ্যমের অনেকেই ভাস্কর্য চর্চা করে চলেছেন। দেশে বর্তমানে একটি সমৃদ্ধ ও সক্রিয় ভাস্কর্য শিল্পীগোষ্ঠীর উপস্থিতি রয়েছে।
এবারের প্রদর্শনীতে সারাদেশ থেকে ২১ বা তদুর্ধ বয়সী ১৩৫ জন শিল্পীর মোট ২৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য জমা পড়ে। নির্বাচকমণ্ডলী বাছাই করে ১০৭ জন শিল্পীর মোট ১১৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করেন। এছাড়া ১৬ জন আমন্ত্রিত এবং প্রয়াত পাঁচজন পথিকৃৎ ভাস্করের একটি করে ভাস্কর্যও এ প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত হবে। এছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য কর্নার থাকবে।
জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে এ বছর ১৩ জন শিল্পীকে পুরস্কৃত করা হবে। পুরস্কার হিসেবে থাকবে পঞ্চম জাতীয় ভাস্কর্য পুরস্কার-২০২১ শ্রেষ্ঠ পুরস্কার একটি, যার মূল্যমান দুই লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার একটি, যার মূল্যমান এক লাখ ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার একটি, যার মূল্যমান এক লাখ টাকা। এছাড়া ১০টি সম্মানসূচক পুরস্কার থাকবে, যার প্রতিটির মূল্যমান ৫০ হাজার টাকা। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে একটি ক্রেস্ট ও একটি সনদপত্রও দেওয়া হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার গ্যালারিতে প্রদর্শনী চলবে ২৯ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত। আর প্রতিদিন সকাল ১১টা (শুক্রবার বিকেল ৩টা) থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২১
এইচএমএস/আরবি