ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

বাংলানিউজকে এমডি মফিজুর রহমান

মায়ানমারের পরে আসামে উড়বে নভোএয়ার

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করসেপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৫
মায়ানমারের পরে আসামে উড়বে নভোএয়ার ছবি: কাশেম হারুণ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ার। পার হয়েছে প্রায় তিন বছর।

এরই  মধ্যে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে মায়ানমারে যাত্রা শুরুর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রুটে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে বেসরকারি এয়ারলাইন্সটি।

আর মায়ানমারের পরেই আসামের গৌহাটিতে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি চলছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান।

রাজধানীর বনানীতে নভোএয়ারের নিজ কার্যালয়ে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর সম্ভাবনা ও বাধা নিয়ে কথা বলেছেন মফিজুর রহমান।

দেশের ভেতরে ফ্লাইট পরিচালনার পর বিদেশের মাটিতে যাত্রা করলে নিজেদের গুণগত মান ধরে রাখতে পারে না বলে বাংলাদেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তবে নভোএয়ারের এ ধরনের কোনো সমস্যা থাকবে না বলে জানিয়েছেন এয়ারলাইন্সটির এই কর্ণধার।

তিনি বলেন, নভোএয়ার আর যাই হোক গুণগত মানের দিকে কখনোই ছাড় দেবে না। আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আমাদের অনেক আগের পরিকল্পনা ছিলো। সে উদ্দেশ্যে আমরা দীর্ঘদিন কাজ করেছি। আমাদের প্রথম লক্ষ্যই ছিলো ভারত ও মায়ানমারে ফ্লাইট পরিচালনা করা। কিন্তু ভারতের তুলনায় মায়ানমারে জটিলতা কম থাকায় আমরা মায়ানমার দিয়েই যাত্রা শুরু করছি।

নভোএয়ারে বর্তমানে তিনটি উড়োজাহাজ আছে যা দিয়ে দেশের অভ্যন্তরের যাত্রীদের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আরো তিনটি প্লেন আনা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, আমরা ২০১৩ সালে যখন যাত্রা শুরু করেছি তখন এমব্রেয়ার ইআরজে ১৪৫ এর দু’টি প্লেন ছিলো। তারপর আমরা আরো একটি প্লেন ভাড়ায় দেশে নিয়ে আসি। ডিসেম্বরে যেহেতু আমাদের মায়ানমারের ইয়াঙ্গুনে ফ্লাইট শুরু হচ্ছে তাই আমরা আরো তিনটি প্লেন আনার ব্যবস্থা করছি। ডিসেম্বরের মধ্যেই আরো তিনটি প্লেন বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করছি। তাহলে আমাদের প্লেনের সংখ্যা হবে ৬টি।

পুরো বিশ্বব্যাপী এভিয়েশন খাতে ব্যাংকঋণের সুদের হার ২ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে এ খাতের জন্য বিশেষ কোনো ঋণনীতি নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, বিশ্বের কোথাও এভিয়েশন খাতের জন্য ২ শতাংশের ওপরে সুদের হার নেই। অথচ আমাদের দেশে ব্যাংকঋণের সুদের হারের ক্ষেত্রে এভিয়েশনের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই। সরকারের উচিত এদিকে নজর দেওয়া। কারণ, মূলধনের ঘাটতি এ শিল্পের জন্য অনেক বড় বাধা।

অন্যদিকে অবকাঠামোগত বাধা এ শিল্পের সামনে চলার পথে অন্তরায় বলে জানিয়েছেন এভিয়েশন খাতের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের অন্যতম বড় বাধাটি হলো অবকাঠামোত অবস্থা। বর্তমানে এ খাতের যে অবকাঠামোগত অবস্থা তাতে এ শিল্পের সামনে এগিয়ে যাওয়া কঠিন।

দেশের বিমানবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত অবস্থার অতিসত্ত্বর উন্নয়নের দাবিও জানান মফিজুর রহমান।

দেশের এভিয়েশন খাতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে বলে উল্লেখ করে নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা এভিয়েশন খাতে দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। এ খাতে যদি দক্ষ জনবল তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে তেমনি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে।

দেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ারের প্রতিষ্ঠাকাল ২০০৭ সাল। কিন্তু তাদের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি। দু’টি প্লেন দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে দেশের বিভিন্ন রুটে ৩টি প্লেন পরিচালনা করছে নভোএয়ার। প্রথম বছর এয়ারলাইন্সটি ৪ হাজার ৫০০ ফ্লাইট পরিচালনা করে যাতে যাত্রীর সংখ্যা ছিলো প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৫
ইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।