ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

৫০ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করতে হবে ব্যাংকের নিজস্ব শাখার মাধ্যমে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২৩
৫০ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করতে হবে ব্যাংকের নিজস্ব শাখার মাধ্যমে

ঢাকা: যেসব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পল্লী অঞ্চলে নিজস্ব শাখা নেই কিংবা থাকলেও কম, সেসব ব্যাংক কমপক্ষে ৩০ শতাংশ কৃষিঋণ নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করতো। এখন সে হার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার নির্দেশনা সংবলিত কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা করলো বাংলাদেশ ব্যাংক।

রোববার (৬ আগস্ট) মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান এ নীতিমালা ঘোষণা করেন। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগের কর্মকর্তা, সহকারী মুখপাত্র ও পরিচালক মো. সরোয়ার হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চলতি বছরের এ কৃষিঋণ নীতিমালায় নতুন কৃষকদের ঋণ দেওয়ার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মৎস্যে কমপক্ষে ১৩ শতাংশ ও প্রাণিসম্পদে কমপক্ষে ১৫ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ আয় উৎসারিত কর্মকাণ্ডে ঋণসীমা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, আগে এ সীমা ছিল না।  

বিদায়ী বছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। বিতরণ করা হয় ৩২ হাজার ৮২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের বছরে বিতরণের হার ১০৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এ ঋণের মধ্যে ১৯ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে ব্যাংকের নিজস্ব চ্যানেলে। বাকি টাকা বিতরণ করা হয়েছে এনজিও লিংক ব্যবহার করে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।  

নতুন কৃষি ঋণ নীতিমালায় ভেনামি চিংড়ি, কাঁকড়া ও কুঁচিয়া চাষে ঋণ বিতরণ করার নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। ঋণ নিয়মাচারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কালো ধান, অ্যাভাকাডো ফল ও পাতি ঘাস চাষ। ছাদ বাগানকেও আনা হয়েছে কৃষিঋণের আওতায়।

দেশের কৃষি যন্ত্রায়নের পথে অনেক এগিয়েছে। আগে থেকেই কৃষি ও সেচ যন্ত্রপাতি কিনতে ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয়। এবারের কৃষিঋণ নীতিমালায় কৃষি ঋণ ও সেচ যন্ত্রপাতি খাতে ঋণের হার আরও বাড়ানো হয়েছে। প্রাণিসম্পদ খাতের পশুপালন খাতে খরচ নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিজস্ব জমির পাশাপাশি লিজকৃত জমিতে খামার স্থাপনের ক্ষেত্রেও ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নতুন কৃষি নীতিমালায় কৃষিঋণ বিতরণে পর্যবেক্ষণ জোরদার করতে শাখা পর্যায় পর্যন্ত নজরদারির আওতায় আনার নির্দেশনা যুক্ত করা হয়। ব্যাংকের শাখাভিত্তিক এবং মাসভিত্তিক ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে ব্যাংকের শাখাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জবাবদিহির আওতায় রাখা হয়েছে।

কৃষি ও পল্লী খাতে ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আলোচ্য কর্মসূচি গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও কৃষি ঋণের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা এ কে এম সাজেদুর রহমান কৃষিঋণ নীতিমালা প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা উল্লেখ করেন।  

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নিজস্ব শাখার মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণে এবারের নীতিমালায় জোর দেওয়া হয়েছে। যেসব ব্যাংক কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হবে, সেসব ব্যাংকের অনর্জিত কৃষি ঋণের সমপরিমাণ টাকা জরিমানা হিসাবে ১৮ মাসের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণের সাধারণ তহবিলে জমা রাখতে হবে।  

এজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক মাত্র ২ শতাংশ হারে সুদ পাবে। আর ওই টাকা কৃষি ঋণ হিসাবে বিতরণ করা হবে। অতীতে কোনো ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণে ব্যর্থ হলেও নতুন নীতিমালায় এ সব ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণে মনোযোগ দেবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।