ঢাকা: করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে এসএমইসহ সব খাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) সিলেট বিভাগের সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও অঞ্চল প্রধানদের সঙ্গে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ও এসএমই কার্যক্রম বাস্তবায়নসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশ দেন সচিব।
হবিগঞ্জের দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যাড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়্যারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং রূপালী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।
রূপালী ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও আতাউর রহমান প্রধান, জনতা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও আবদুস সালাম আজাদ এবং অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও শামস উল ইসলাম সভায় ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে ১ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে করোনা মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের (সিএমএসএমই) জন্য বরাদ্দ দেন ২০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এই খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো সেভাবে এগিয়ে না আসলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্যাকেজ বাস্তবায়নে শক্ত অবস্থান নেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।
তিনি তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো নিয়ে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য সক্রিয়ভাবে এগিয়ে এসেছেন এবং চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যে এই খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করতে কার্যকরী উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে সিলেটের সভায়ও প্রণোদনা প্যাকেজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শক্তভাবে নির্দেশ দিয়েছেন মো. আসাদুল ইসলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক সভায় চলতি অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে সিএমএসএমইখাতে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওই সভায় সিএমএসএমইখাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের ব্যবসায় ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছেন তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যথাযথভাবে বাস্তবায়নে ওই সভায় কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সচিব।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় সিএমএসএমইখাতের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
ওই খাতের গ্রাহকদের চিহ্নিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট আইডিকার্ডভিত্তিক একটি তথ্যভাণ্ডা সৃষ্টি করার বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি যা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কাজ করছে বলে জানা গেছে।
হবিগঞ্জের ওই সভায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের জিএম খাঁন ইকবাল হোসেন, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের জিএম ফয়েজ আলমসহ বিভিন্ন ব্যাংকের নির্বাহী কর্মকর্তারা সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়ন, অগ্রগতি এবং বিদ্যমান সমস্যাসমূহ নিয়ে আলোচনা করেন।
সভায় সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা দেওয়া নিশ্চিত করার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়।
কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আশ্বস্ত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
এএটি