ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

আছে উচ্ছ্বাস, তবে এখনো গুছিয়ে ওঠেনি মেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩
আছে উচ্ছ্বাস, তবে এখনো গুছিয়ে ওঠেনি মেলা

ঢাকা: বছর ঘুরে আবারো এলো ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। একুশের চেতনায় শাণিত হয়ে শুরু হলো অমর একুশে বইমেলা ২০২৩।

মেলায় বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।  

পাঠক, লেখক ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মেলার দুই প্রাঙ্গণ বাঙালির সৃজন ও মননের প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি ও স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।  

বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে ঘুরে পছন্দের বইটি কেনার পাশাপাশি প্রিয় লেখকের সঙ্গে সেলফি তুলে বইয়ের মলাটে অটোগ্রাফ নেওয়ার শৈল্পিক দৃশ্যে ফেব্রুয়ারিজুড়ে অন্যরকম আমেজ বিরাজ করবে মেলা প্রাঙ্গণে।

বিকেল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী মেলার উদ্বোধনের পর বিকেল ৫টায় জনসাধারণের জন্য মেলার প্রবেশদ্বারগুলো খুলে দেওয়া হয়। অন্যান্য বছর শুরুর দিকে যে পরিমাণ দর্শনার্থী ও ক্রেতা আসেন, সে তুলনায় এবার প্রথম দিনেই দর্শক ও ক্রেতাদের আগমন ছিল আশাব্যঞ্জক।

মেলার প্রথম দিন বিকেলে প্রায় প্রতিটি স্টল ও প্যাভিলিয়নের সামনে বইপ্রেমীদের আনোগোনা ছিল উল্লেখ করার মতো। মেলায় আগতদের চোখেমুখে ছিল উৎসবের ঝিলিক।

করোনার চোখ রাঙানি নেই বলে বাঙালির প্রাণের মেলায় নতুন করে উচ্ছ্বাস বইবে এমন আশা প্রকাশ করেছেন মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি ও অংশগ্রহণকারী প্রকাশকেরা। করোনা মহামারির দাপট শেষে দুই বছর পর প্রথা অনুযায়ী এবারের মেলা সঠিক সময়ে শুরু হলো।

বিকেলে মেলা ঘুরে দেখা যায়, পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন অনেকেই। দীর্ঘদিন পর মেলা শুরু হওয়ায় সন্তুষ্ট সবাই। মেলার পরিবেশ নিয়েও সবাই আশাবাদী।

মেলা শুরু হলেও মেলার উভয় প্রান্তে এখনও বেশ কিছু স্টলের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। একেবারেই শেষ হয়নি লিটলম্যাগ চত্বরের স্টলের কাজ।  

মেলা ঘুরে দেখা যায়, রাতেও স্টল নির্মাণের কাজে ব্যস্ত নির্মাণ শ্রমিক ও মালিকপক্ষ। মেলার ভেতরে প্রতিটি স্টল-প্যাভিলিয়নের সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা, শেষ হয়নি শৌচাগার নির্মাণ, নামাজের জায়গার নির্ধারিত স্থানের কাজ। প্রতি বছরের মতো এবারো এলোমেলোভাবেই শুরু হলো এবারের বইমেলা।

তবে গত বছরগুলোর তুলনায় এবার মেলার পরিস্থিতি ভালো— বলেছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। তাদের বিশ্বাস, এবার আগেভাগেই মেলা জমে উঠবে। প্রথম দিনের মেলা, সেজন্য হয়তো অপরিচ্ছন্ন। খুব শিগগিরই মেলার আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হবে। মেলার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরে আসবে।  

জ্ঞানকোষ প্রকাশনীর প্রকাশক নাজমুল বলেন, মেলা তো আজই শুরু, তাই হয়তো কিছুটা অপরিচ্ছন্ন দেখা যাচ্ছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই মেলা পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরে পাবে। তবে এবার পরিবেশ ও পরিস্থিতি আগের বছরগুলোর চেয়ে ভালো।  

এ বিষয়ে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিনে একটু অসুবিধা থাকেই। আশা করছি দুই-এক দিনের মধ্যে আমরা সব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবো।

এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে মেলার পরিসর। এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানের ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ৭৩৬টি ইউনিটসহ এবারের মেলায় মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানের ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে। মেলায় প্যাভিলিয়ন রয়েছে ৩৮টি।  

শিশুচত্বর মন্দিরের গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে। আর লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থ-উন্মোচন অংশের কাছাকাছি। সেখানে ১৫৩টিসহ পাঁচটি উন্মুক্ত স্থানে লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার আয়োজনের পাশাপাশি সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে মেলা চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। শুক্র ও শনিবার মেলার প্রবেশদ্বার খোলা হবে সকাল ১১টায় আর ২১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩
এইচএমএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।