ঢাকা: ‘বাংলায় ইতিহাস চর্চায় আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ এক স্মরণীয় নাম। বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার প্রকৃত পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বুধবার বিকেলে অমর একুশে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে ‘আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক অজয় রায়, এনামুল হক, শামসুল হোসাইন, মো. মাহবুবর রহমান। সভাপতিত্ব করেন এ বি এম হোসেন।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, দৃঢ় আদর্শবাদী আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ ইতিহাস রচনায় যে নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন সমকালে তা বিরলদৃষ্ট। তিনি ছিলেন স্বাতন্ত্র্যবাদী ইতিহাসবিদ। তাই তথ্যের সমাবেশ অতিক্রম করে তার রচিত ইতিহাস হয়ে উঠেছে নতুনতর এক মানবিক কলা।
আলোচকবৃন্দ বলেন, উপাদান বা হাতিয়ার নয়, সংগঠিত মানুষই যে ইতিহাসের নির্মাতা আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ তা বিশ্বাস করতেন এবং তাঁর বিস্তৃত ইতিহাসচর্চায় এ দৃষ্টিভঙ্গির অগ্রবর্তী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর কাজের ক্ষেত্র ছিল বিশাল-বিস্তৃত। বাংলা অঞ্চল, ভারত উপমহাদেশের ইতিহাস প্রণয়নের পাশাপাশি গোটা বিশ্ব ইতিহাসের গতিবিধির তিনি ছিলেন নিষ্ঠ পর্যবেক্ষক। ইতিহাসের সামাজিকীকরণে বিশ্বাসবোধ থেকেই তিনি বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন। সাধারণ মানুষের কাছে ইতিহাসকে পৌঁছে দেওয়ার জন্যে তিনি সচেষ্ট ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে এ বি এম হোসেন বলেন, সাম্যবাদে অবিচল আস্থাশীল আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ভাষা ও ভূগোলকেন্দ্রিক আধুনিক জাতীয়তাবাদের শিখা প্রজ্বলিত রেখেছেন তার লেখনি ও সাংগঠনিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে। পাণ্ডিত্যের ব্যাপ্তিকে তিনি বোঝা করে
তুলেননি; বৃহত্তর স্বদেশবাসীর সম্মুখ যাত্রার পথ-প্রদর্শন করে আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ জাতির অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৪