বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: বিকেল গড়াতেই জমে উঠেছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের ৬ষ্ঠ দিনের বইমেলা। সাপ্তাহিক ছুটিকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার বিকেলেই লেখক-পাঠক, ক্রেতা, দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গন।
কদিন আগের রাজনৈতিক অস্থিরতার লেশমাত্র প্রভাব দেখা যাচ্ছে না মেলায় আসা আগতদের মাঝে। কেউ কেউ আসছেন দলবেঁধে, কেউ আসছেন প্রিয় সঙ্গীকে নিয়ে আবার কেউ নিয়ে এসেছেন পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে।
প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবারও ৩টা থেকে শুরু হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা। শুরু হওয়ার ঘণ্টা খানেকের মাঝেই ভিড় বাড়তে থাকে।
বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এ বইমেলা উৎসবে পরিণত হয়েছে অনেক আগেই। এখন তা বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে গড়ে ওঠা প্রাণের এই বইমেলা পার করেছে তিন যুগেরও বেশি সময়। এ দীর্ঘ সময়ে প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের সংঙ্গে গড়ে উঠেছে নীবিড় সম্পর্ক।
শুধু তাই নয় বুদ্ধিবৃত্তিক মননশীলতায় মেলার অভিব্যক্তি এখন দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।
গুণগত অর্থে এবারের বইমেলা কিছুটা ভিন্ন। প্রয়োজনে, চাহিদার চাপে মেলা এবার বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ থেকে খানিকটা দূরেই বটে। ফলে মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থীরা কিছুটা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই কাঙ্ক্ষিত স্টল খুঁজে পাচ্ছেন না স্টল প্ল্যানার না থাকায়। তাছাড়া স্টলগুলোতে এখনো নম্বর বসানো হয়নি।
প্রকাশকদের প্রত্যাশা আগামীকাল থেকে মেলা আরো জমে উঠবে। দুদিনের সরকারি ছুটি কাটাতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে মেলায় আসবেন। গত বছরের তুলনায় এবার প্রকাশকদের অনেকটা নির্ভারই মনে হচ্ছে।
জামায়াত-শিবিরের ডাকা হরতালের কোনো প্রভাব নেই মেলায়। হালকা শীত এবং সমাগত ফাল্গুনের আভায় পরিচ্ছন্ন ভাব মেলাজুড়ে।
অবসর প্রকাশনীর ম্যানেজার মাসুদ রানা বাংলানিউজকে বলেন, আজ প্রথম ঘণ্টায় মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীদের সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। দেখতে দেখতে পাঠক-ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। আশা করছি সন্ধ্যার মধ্যে উপস্থিতি আরো বাড়বে। আশা করছি বিক্রি ভালো হবে আজ।
তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা সম্প্রসারণ করা হয়েছে এটি এখনো অনেকেই জানেন না। তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নেওয়াতে এর প্রচারও হয়নি তেমন। তাই মেলায় আগতদের প্রথমত প্রবণতা হলো বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণের দিকে। অনেকেই সেখানে না পেয়ে পরে এখানে আসছেন।
এদিকে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সংগঠন সাইটসেভার’র সহযোগিতায় পরিচালিত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি স্টল উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন এমপি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি, সাইটসেভারস এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. মো. গোলাম বিকরিয়া প্রমুখ।
এ স্টলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের (ব্রেইল বই, ব্রেইল চেস) শিক্ষা উপকরণ পাওয়া যাবে।
**বৃহস্পতিবার মেলায় ৯৭টি নতুন বই
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৪