লেখা পড়ে প্রেম, আর বই করতে করতে বিয়ে— এমনই এক দম্পতি, পরবর্তীতে একটি প্রকাশনা সংস্থাই হয়ে উঠেছে যাদের জীবন ধারণ ও আয় রোজগারের উপায়। রামশংকর দেবনাথ আর বিপাশা মন্ডল— বিভাস প্রকাশনীর দুই সত্ত্বাধিকারী।
বিভাস ছিল একটি লিটল ম্যাগাজিন। আর এর সম্পাদক রামশংকর তখন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় হরহামেশাই মুদ্রিত হয়, এমন একটি নাম মুখস্ত করে চলছিলেন। মেয়েটির লেখা তার ভালো লাগতো। কি গল্প, কবিতা বা অনুবাদ— সবকিছুতেই সমদক্ষ এই লেখকের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করার বাসনা জন্মেছিল তার!
আর খুব দ্রুতই সে যোগাযোগ স্থাপন করে ফেলেন তিনি। গড়ে ওঠে যোগাযোগ। বিপাশা মন্ডলের প্রথম কবিতার বই ‘সহাস্য বিষণ্নতা’ ততদিনে প্রকাশিত। এরইমধ্যে বিপাশা লিখে শেষ করেছেন তার প্রথম উপন্যাস ‘আরমান শেখ ও তার শেকড় সংক্রান্ত জটিলতা’। কোথায়, কিভাবে ছাপানো যায় উপন্যাসটি, তাদের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছিল এসব প্রসঙ্গে।
আর রামশংকর নিজেও যেহেতু কবি, একটু অদ্ভুত করে কিছু ভেবে ফেলবার স্বাধীনতা তার সহজাত। সেহেতু বিপাশা মন্ডলের ওই উপন্যাস ছাপতে গিয়েই জন্ম হলো বিভাস প্রকাশনের। এরমধ্যে বিয়ে সেরে ফেললেন তারা, শুরু হলো যৌথ জীবন। আর এই জীবন ধারণের খরচ যোগান দিতেই বিভাস নিয়ে সিরিয়াস হন দু’জন।
কম্পোজ ও প্রুফ রিডসহ প্রোডাকশনের বেশ কিছু কাজ ঘরেই, নিতান্ত ঘরোয়া ভঙ্গিতেই সমাধা করে ফেলেন তারা। দৈনন্দিন জীবনে ঘর গোছানোর মতো করেই কেউ হয়তো একফর্মা প্রুফ রিড করে ফেললেন। এভাবেই টুকটাক কাজ এগিয়ে রাখার ভঙ্গিতে সংসার ও প্রকাশনা— দুটোই চলতে থাকে।
এরইমধ্যে তাদের এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়, প্রকাশনা সংস্থার নামানুসারে তার নাম রাখা হয় ‘বিভাস’।
বইমেলার ১৪তম দিনে, বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানস্থ বিভাস প্রকাশনের স্টলে মা-বাবা-ছেলে তিনজনকেই পাওয়া গেল। ভাবলাম, আগেই অর্ধেক শুনে রাখা গল্পটাকে আজ শুনে শেষ করে ফেলা যাক! এরপর বিভাসের স্টলে বসে বিপাশা, রামশংকর আর বিভাসসহ এসব গল্পই হচ্ছিল আমাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪