ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

অন্যদের তর্কে ঢুকে পড়েন কবি সরদার ফারুক

তানিম কবির, বিভাগীয় সম্পাদক শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৫
অন্যদের তর্কে ঢুকে পড়েন কবি সরদার ফারুক আনন্দ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আশির দশকে লিখতে শুরু করার ৩২ বছর পর ২০১২ সালে বেরোয় প্রথম কবিতার বই ‘আনন্দ তুমি কোথায়’। এরপর গেল তিন বছরের মধ্যেই আরও ছয়টি বই প্রকাশিত হয় কবি সরদার ফারুকের।

এ মেলায় দুটি, ‘অন্যদের তর্কে ঢুকে পড়ি’ ও ‘দূরের জংশন’।

গত বছর বেরিয়েছিল ‘ও সুদূর বীজতলা, মঠের গম্বুজ’, ২০১৩ সালের বইমেলায় ‘দীপালি অপেরা’ ও ‘উন্মাদ ভূগোল’। আর ২০১২ সালে ‘আনন্দ তুমি কোথায়’ ছাড়াও বেরিয়েছিল দ্বিতীয় কবিতার বই ‘পড়ে আছে সমুদ্র গর্জন’।

৩২ বছরের চাপ শেষ তিন বছরকেই নিতে হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে রসিকতা ধরতে পারলেন সরদার ফারুক।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫-র দ্বিতীয় দিন, সোমবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বাংলানিউজের মিডিয়া সম্প্রচার স্টলে এসে নতুন প্রকাশিত বই, কবিতা ও বইমেলা নিয়ে কথা বলেন কবি সরদার ফারুক।

জানান, আশির দশকের শুরুতে বরিশালে অবস্থানকালে কবিতা লেখা শুরু করেন তিনি। সেই সময় শামসুর রাহমান সম্পাদিত ‘বিচিত্রা’ ও হেলাল হাফিজ সম্পাদিত ‘দৈনিক দেশ’ সহ বরিশাল থেকে প্রকাশিত ‘লোকবাণী’ পত্রিকায় তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়।

কিন্তু তার কিছুদিন পর, ১৯৮২ সাল থেকে জড়িয়ে পড়েন স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র গণ আন্দোলনের সঙ্গে। এরপর নব্বই সাল পর্যন্ত আন্দোলনে বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বে একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে ‘সিরিয়াসলি সাহিত্যিক কর্মকাণ্ডে’ জড়িত হবার ফুসরতই পাননি। যদিও গোপনে কবিতা লেখা চালিয়ে গেছেন।

আর ততদিনে সমসাময়িক অন্যান্য কবিদের সঙ্গে মেলামেলা করবার অলিখিত শর্তচ্যুত হয়ে খানিকটা নিঃসঙ্গই হয়ে পড়েন তিনি। আশির দশকের কবিবন্ধুদের তালিকায় বর্তমানে কলকাতায় স্থায়ী হওয়া বিষ্ণু বিশ্বাসের নামটাই তাই একমাত্র উল্লেখযোগ্য।

২০০৭ থেকে ’১০-এর মধ্যে ব্লগ ও ফেসবুকের মত অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ বিরতির পর আবারও নিজের লেখা নিয়ে প্রকাশিত হন সরদার ফারুক। তাঁর মতে, নিজের লেখার শক্তি ও প্রকাশিত হবার এমন সহজ উপায়—এ দুয়ের সমন্বয়েই কবি হিসেবে নিজের একটি পাঠকশ্রেণী গড়ে তুলতে পেরেছেন তিনি।

প্রশ্ন আসতে পারে, অন্যদের তর্কে কিভাবে ঢুকে পড়েন তিনি—বইয়ের এমন নামকরণের পেছনের গল্পটাই বা কী?

সরদার ফারুকের ব্যাখ্যা, ব্যক্তিমানুষ হিসেবে যতই নির্বিবাদ বা নির্বিকার থাকতে চাওয়া হোক না কেন—কোনও না কোনওভাবে বিভিন্ন তর্কে জড়িয়ে পড়া ঠেকানো যায় না। এড়াবার আন্তরিক ইচ্ছে নিয়েও জড়াবার যেই ঘটনাটি ঘটে যায়, ওই ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেই বইয়ের এ নামকরণ।

আর কিছু বলতে চাইলে বলুন—এমন আমন্ত্রণে তেমন কিছু বলার ছিল না সরদার ফারুকের। তবু আমরা তার দূরের জংশন বই থেকে একটি কবিতা পড়তে পারি। তার আগে বলে নেওয়া ভালো, এবারের মেলায় প্রকাশিত তাঁর এ দুটি বই পাওয়া যাবে লিটলম্যাগ চত্বরের ‘অনুপ্রারণ’ ও ‘মানুষ’-এর স্টলে।

শহরের গল্প

রবীন, তোমার ছোট বোনটাকে চিনি
ঢ্যাঙা সেই ছোকরার সাথে ঘোরে, সিনেমায় যায়
বড় বোন এখনও অনূঢ়া
জানালার ধারে বসে থাকে

এই শহরের গল্পগুলো সকলেরই জানা
শিক্ষা সফরের দিনে আমরা প্রথম
সমুদ্র দেখেছি

(দূরের জংশন, পৃষ্ঠা ২১)

বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।