বইমেলা প্রাঙ্গন থেকে: বই মেলা যেন তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের বইপ্রেমীদের সান্ধ্যকালীন আড্ডাস্থল হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি চত্বর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলায়’ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্টলের পর স্টলে সাজিয়ে রাখা বই। স্টলের সামনে বইপ্রেমী দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি বইমেলাকে কেন্দ্র করে যেন বাঙালির মিলনমেলার মাস হয়ে উঠেছে।
বিকেল থেকেই দর্শনার্থীরা এই মিলন উৎসবে যোগ দিতে থাকলেও এর চুম্বক সময় হয়ে উঠে সন্ধ্যা। সন্ধ্যার পরপর বিভিন্ন স্টলের সামনে জমিয়ে আড্ডা দিতে দেখা যায় তরুণ-তরুণীসহ বইমেলায় আগত বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের। এমন তিন তরুণ আব্দুল হালিম অপু, মামুন রশীদ ও ফাহিম হাসান।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফাহিম হাসান বলেন, বইমেলায় যতটা না বই কিনতে আসা, তার চেয়ে ভালো লাগছে বই দেখতে। ঘুরে ঘুরে বই দেখে দেড়ঘণ্টা কাটিয়েছি। এখন তিন বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছি। এতেই ভালো লাগছে।
তরুণদের আগমন বেশি চোখে পড়লেও বয়স্করাও আসছেন বইমেলায়। বড় বড় কবি সাহিত্যিকরাও সমসাময়িক কবি লেখকদের বই দেখছেন মেলায় ঘুরে।
বিকেলে মেলায় ঘুরে গেছেন কবি আসাদ চৌধুরী। একই সময় আড্ডা দিচ্ছিলেন রেজা উদ্দিন স্টালিনসহ অনেক কবি-লেখক। সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে, পাঠক-দর্শক ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। সন্ধ্যার পরপরই বইমেলায় যেন প্রাণের উচ্ছ্বাস বয়ে যাচ্ছিল।
বিভিন্ন স্টলের বিক্রেতারা জানান, এখনও ক্রেতা কম। মেলায় যত দিন গড়াবে, বাড়বে বই, বাড়বে পাঠক-ক্রেতার সমাগম।
একুশের বইমেলার অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ পর্যন্ত এত মানুষের সমাগম ঘটে যে, শেষ পর্যন্ত বইমেলা মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
এবার মেলার স্টলগুলো বেশ বড়সড়, মেলায় বিস্তৃতিও অনেক বেড়েছে। এতে পাঠক স্বাচ্ছন্দ্যে বই দেখতে পারছেন।
মেলার তথ্যকেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলার দুয়ার। তবে ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলায় আসতে পারবেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।
তথ্যকেন্দ্র আরও জানায়, তৃতীয় দিনে মেলায় নতুন ১০১টি বই এসেছে। এর মধ্যে ২৬টি উপন্যাসগ্রন্থ, ১১টি গল্পগ্রন্থ, ৪টি প্রবন্ধগ্রন্থ, ২৭টি কাব্যগ্রন্থ, ১টি ছড়াগ্রন্থ, ৪টি শিশু সাহিত্য, ৩টি জীবনীগ্রন্থ, ৪টি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ, ৪টি বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ, ৩টি ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থ, ২টি ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থ, ২টি অভিধান বিষয়ক গ্রন্থ, ১টি চিকিৎসা বিষয়ক গ্রন্থ, ১টি রচনাবলী এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৫